দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা নাজুক অবস্থায় রয়েছে। লুটপাটের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়ে গেছে বিভিন্ন চক্র। শুধু পরিচালকরাই নিয়ে গেছে পৌনে ২ লাখ কোটি টাকা। যা সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন। পত্রপত্রিকায় নিয়মিতই ব্যাংকিং খাতের দুর্নীতি, লুটপাট ও অনিয়মের খবর ছিল বিগত সময়ের অন্যতম আলোচ্য। এসব পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নীতিনির্ধারকদের। কিন্তু কেন এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো—সে প্রশ্নের উত্তরও পাওয়া যাচ্ছে না।
খেলাপি ঋণের ভারে জর্জরিত ব্যাংকিং খাত নিয়ে এখন উদ্বেগ থাকলেও একদিনে তো এই পরিস্থিতি হয়নি। হঠাত্ করেই ব্যাংকগুলোর টাকা নিয়ে নেয়নি কেউ। একই সঙ্গে সবগুলো ঘটনা ঘটেনি। হলমার্ক, বিসমিল্লাহ, এ্যাননটেক্স, বেসিক ব্যাংক, জনতা ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনাগুলো বিভিন্ন সময়ে ঘটেছে। তাহলে প্রতিকার হয়নি কেন? অতীতের সেই ‘জঞ্জাল’ সরিয়ে ব্যাংকগুলো কবে নাগাদ মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়াবে—সে চিন্তাও ওয়াকিবহালমহলের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, ব্যাংকিং খাতে দুরবস্থা একদিনে হয়নি। যদি একটি ঘটনার শাস্তি হতো, তবে অন্য ঘটনাগুলো হয়তো ঘটত না। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না নেওয়ায় একের পর এক ঘটনা ঘটেছিল। তখন কোনো কোনো মহল থেকে ‘৪ হাজার কোটি টাকা’ কিছুই না বলেও মন্তব্য করা হয়েছে। আবার ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদে নিয়োগ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রেও দায়িত্বহীনতার পরিচয় প্রকাশ পেয়েছে বলে মনে করছেন খোদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র।
এই সূত্রমতে, ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনাগুলো ঘটেছে ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মেয়াদে থাকা দায়িত্বশীলদের সময়ে। ঐ সময়কার পুঞ্জিভূত সমস্যা এখন বড়ো আকার ধারণ করেছে। তখন ব্যবস্থা না নিয়ে তত্কালীন দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ এখন নানা মন্তব্য করছেন। বলছেন—এ সংস্কৃতি বন্ধ হওয়া উচিত। এ ধরনের মন্তব্যে রীতিমতো উষ্মা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র। তাদের মতে, এসব বলে কেউ দায় এড়াতে পারেন না।
রিজার্ভ চুরির তদন্ত রিপোর্ট কেন প্রকাশ হয়নি? শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির তদন্ত রিপোর্ট কে ব্যাগে নিয়ে ঘুরেছেন এবং কেন প্রকাশ করা হয়নি—সে প্রশ্নও রেখেছেন কোনো কোনো সূত্র।