গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে প্রেরণ করেন একজন সচেতন নাগরিক। ভিডিওটিতে দেখা যায়, কোনো একটি ওভারব্রিজের ওপর পথচারীদের উপস্থিতিতেই এক কিশোরীকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির পাশাপাশি অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করছে এবং নির্বিচারে মাথায় ও গালে আঘাত করছে এক যুবক। ঘটনাস্থলে যুবকের সাথে একটি মেয়েসহ আরো কয়েকজন উপস্থিত ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে যাত্রাবাড়ি থানার অধীন শনির আখড়া ফুটওভার ব্রিজের উপর।
এ ব্যাপারে এআইজি (মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা জানান, ভিডিওটি হাতে পেয়ে, যাত্রাবাড়ি থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মাজহারুল ইসলামের নিকট ভিডিওটি পাঠিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয় মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং। ওসি যাত্রাবাড়ি তাৎক্ষনিকভাবে অভিযুক্ত ও ভিকটিমকে খুঁজে বের করতে তার একটি টিমকে নিয়োজিত করেন। ভিডিওতে কোনো নাম ঠিকানা বা কোনো প্রাসঙ্গিক তথ্য না থাকায় গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে অভিযুক্তের নাম পরিচয় বের করা হয়। জানা যায়, অভিযুক্ত যুবকের নাম সাদ্দাম হোসেন ওরফে হৃদয়। যাত্রাবাড়ি এলাকায় তার বসবাস। তবে, তাৎক্ষনিকভাবে ভিকটিমের নাম পরিচয় সনাক্ত করা যায়নি।
ঘটনাস্থল বা সংশ্লিষ্ট এলাকায় ভিকটিম মেয়েটিকে আগে কেউ কখনো দেখেনি। যাই হোক, হৃদয়কে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ নানা স্থানে অভিযান চালায়। কিন্তু, ঘটনার পরপরই চতুর হৃদয় এলাকা ত্যাগ করে। ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অবস্থান করে সে। পুলিশও তার পিছনে দীর্ঘদিন লেগে থেকে অবশেষে ১৪ জুন বিকেলে তাকে গ্রেফতার করে।
হৃদয়কে গ্রেফতারের পর জানা যায়, সে টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তার বিকৃত অদ্ভুত স্টাইল প্রচার করে মেয়েদেরকে কৌশলে আকৃষ্ট করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে সর্বস্বান্ত করে আসছিল। এছাড়া, বিভিন্ন সময় মেয়েদেরকে জিম্মি করে টাকা-পয়সা আদায় করতো সে। মেয়েদেরকে উত্যক্ত করতো ও সম্ভ্রমহানি করতো।
উল্লিখিত ঘটনাটি ঘটেছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনস-ডে এর দিন। ভিকটিমকে খুঁজে বের করে তার সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে এই বিষয়টির সাথে লেগে থেকে অপরাধীকে খুঁজে বের করে তাকে আইনের আওতায় এনে পেশাগত আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছেন ওসি যাত্রাবাড়ি। এই বিষয়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।