প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যেকোনো অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তার বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগর ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ কমিটির পক্ষ থেকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রেড জোনভুক্ত জেলা এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলাসমুহের বিভিন্ন হাসপাতালে উন্নতমানের এই ভাইরাস প্রতিরোধ সামগ্রী প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনারা জানেন, যেকোনো অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান কঠোর। সততা ও নিষ্ঠার প্রতীক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নেয়া শুদ্ধি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি নিজ থেকেই ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করেছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘যার ধারাবাহিকতায় চিকিৎসাব্যবস্থা নিয়ে যারা বা যে অশুভ চক্র প্রতারণা করছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এ সকল অনিয়ম বাহির থেকে কেউ ধরিয়ে দেয়নি। সরকার নিজ উদ্যোগে শুরু করেছে অনিয়ম রুখতে কঠোর অভিযান।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘চিকিৎসা ব্যবস্থা বিশেষ করে হাসপাতাল, নমুনা পরীক্ষার ভুয়া সনদ, প্লাজমা ডোনেশন, সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়, হাসপাতালের যন্ত্রপাতি সংগ্রহসহ অন্যান্য খাতের সঙ্গে স্বাস্থ্যখাতের নানান অনিয়মের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে, অব্যাহত থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘অপরাধীর কোন দলীয় পরিচয় নেই। যত ক্ষমতাধর হোক তাকে আইনের আওতায় আসতে হবে। যারা জনগণের অসহায়ত্ব নিয়ে অবৈধ ব্যবসা করছে, প্রতারণা করছে, শেখ হাসিনা সরকার তাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণতার নীতিতে অটল।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, করোনা সঙ্কটের শুরু থেকে সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ অসহায়, কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। স্থাপন করেছে মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত মাটি ও মানুষের দল হিসেবে দেশের যেকোনো দুর্যোগে সবার আগে ছুটে যায় আওয়ামী লীগ। অসহায় মানুষের পাশে থাকা আওয়ামী লীগের সাত দশকের ঐতিহ্য।
তিনি বলেন, এরই মাঝে দেশব্যাপী প্রায় সোয়া এক কোটি পরিবারের মাঝে দলীয়ভাবে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। সাড়ে ১০ কোটি টাকার বেশি নগদ সহায়তা দেয়া হয়েছে। খাদ্য ও নগদ সহায়তা ছাড়াও অন্যান্য সহায়তা বিশেষ করে স্বাস্থ্য সেবায় সুরক্ষা সামগ্রী, টেলিমেডিসিন, অ্যাম্বুলেন্সসহ নানাবিধ উপায়ে মানুষের সঙ্গে আছে আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এখন বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে আছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। আমি দুর্গত এলাকার মানুষকে সহায়তার জন্য আবারও দলীয় নেতাকর্মীদের আহ্বান জানাচ্ছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা সঙ্কটে জনসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণের জন্য ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটিকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণের ধারাবাহিকতায় আজ অক্সিজেন জেনারেটরসহ বিভিন্ন সামগ্রী প্রদান করা হচ্ছে সংক্রমিত জেলা সমূহের হাসপাতাল ও বন্যা কবলিত জেলাগুলোর সদর হাসপাতালে।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, করোনা সঙ্কটের পাশাপাশি বন্যাদুর্গত অসহায় মানুষের সুরক্ষা সরকারের জন্য নতুন আরেকটি চ্যালেঞ্জ। আপনারা জানেন, ফি বছর নানান ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। আমাদের আছে সঙ্কটের সাহসী ও মানবিক নেতৃত্বের শেখ হাসিনা দুর্যোগকালে মানবিকতার আধার ও আস্থার ঠিকানা।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সব সময় অসহায় মানুষের পাশে আছেন। বন্যা দুর্গত এলাকায় মানুষের সুরক্ষা মানবিক সহায়তা প্রদানে ইতিমধ্যে তিনি দিয়েছেন প্রয়োজনীয় নির্দেশনা। এর পাশাপাশি বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর পরই শুরু হবে পুনর্বাসন কার্যক্রম। গ্রামীণ অবকাঠামো, কৃষি ক্ষেত্রে বিভিন্ন সহায়তাসহ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নেয়া হচ্ছে গুচ্ছ পরিকল্পনা। আপনারা মনোবল হারাবেন না, মনে সাহস রাখুন।
এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন ও সাখাওয়াত হোসেন শফিক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাস, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজি ও আনিসুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।