দক্ষিণ অফ্রিকায় অপহরণ চক্রের সাথে জড়িয়ে পড়ছে কিছু প্রবাসী বাংলাদেশি। সে দেশে অপহৃত এক বাংলাদেশি যুবককে উদ্ধারের পর স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে এমন তথ্য জানিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
বাংলাদেশের পুলিশ জানায়, ওই যুবককে অপহরণের সঙ্গে জড়িতরা বাংলাদেশের একটি ব্যাংক হিসাবে টাকা পরিশোধ করতে বলেছিল অপহৃতের স্বজনদের। সেই হিসাব নম্বরটি শনাক্ত করে সেখান থেকে মুক্তিপণ হিসেবে আদায় করা এক লাখ টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার মো. শহীদুল্লাহ জানান, গত ৩১ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকার টুইফনটেন এলাকার একটি দোকান থেকে চট্টগ্রামের যুবক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল রেজাকে (২৪) অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে চার কৃষ্ণাঙ্গ।
রেজা দুই বছর ধরে খালাত ভাইয়ের দোকানে চাকরি করতেন বলে তিনি জানান।
ঘটনার পর দোকান মালিক মো. ফরহাদ দূতাবাসের মাধ্যমে সে দেশে একটি অপহরণ মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করছে দক্ষিণ আফ্রিকা পুলিশের ক্রাইম ইন্টেলিজেন্সের ন্যাশনাল কিডন্যাপিং ট্রাস্ক টিম।
গত সপ্তাহে অপহৃত রেজাকে উদ্ধার করে এক বাংলাদেশি ও এক পাকিস্তানী নাগরিককে গ্রেপ্তার করে দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ। গ্রেপ্তার বাংলাদেশির ব্যক্তির নাম আমিনুল হক (৩৫) বলে জানায় পুলিশ। তার বাড়ি ফেনীতে।
উপ-কমিশনার শহীদুল্লাহ বলেন, “অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে বাংলাদেশি একটি ব্যাংকের হিসাব নম্বরে ৫০ লাখ টাকা জমা করতে বলে রেজার স্বজনদের। রেজার স্বজনরা চট্টগ্রাম কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সাথে সে দেশে হওয়া মামলার নথিপত্র নিয়ে যোগাযোগ করে গত সপ্তাহে।
“অভিযোগ পেয়ে আমরা মামলার বাদির সাথে কথা বলে বিস্তারিত ঘটনা শুনি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার তদন্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে কাজের সমন্বয় করি।”
পুলিশ কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ বলেন, “দক্ষিণ আফ্রিকা পুলিশ গত মঙ্গলবার এক পাকিস্তানী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর আমাদেরকেও কাজ শুরু করতে বলে। তখন আমরা নিশ্চিত হয়েছি বেসরকারি ব্যাংকটির হিসাবধারী ফেনীতে থাকেন। এসময় তাকে (হিসাবধারী) জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায় দক্ষিণ আফ্রিকায় তার ছোট বোনের স্বামী তার ব্যাংক হিসাব নম্বরটি নিয়েছে এবং সেখানে এক লাখ টাকা আসার কথা জানিয়েছে।
“আমরা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি আমিনুল অপহরণের সাথে জড়িত থাকলেও বাংলাদেশে তার স্বজন (হিসাবধারী ব্যক্তি) কিছুই জানতেন না সে বিষয়ে। পাশাপাশি আমিনুলকে গ্রেপ্তারের পর দক্ষিণ আফ্রিকা পুলিশও আমাদের নিশ্চিত করেছে হিসবাধারী এই বিষয়ে কিছু জানেন না। তাদের পরামর্শে আমরা হিসাবধারীকে ছেড়ে দিয়ে টাকা উদ্ধার করেছি এবং বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছি।”
দক্ষিণ আফ্রিকা পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে চট্টগ্রাম কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট প্রধান শহীদুল্লাহ জানান, অপহরণ চক্রটির সাথে দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয়রা ছাড়াও বাংলাদেশি ও পাকিস্তানীরা জড়িত আছে।
চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে সে দেশের পুলিশ কাজ করছে বলেও জানান তিনি।