অবৈধ অস্ত্রসহ যুবলীগ নেতা খালেদ গ্রেফতার

ce-5d82510a4a7ff

নানা সমালোচনার পর যুবলীগের বিরুদ্ধে অ্যাকশন শুরু করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বুধবার রাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়াকে গুলশানের বাসা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তার হেফাজতে একটি অবৈধ অস্ত্র পাওয়া গেছে।

এছাড়া খালেদের কাছে লাইসেন্সের মেয়াদোত্তীর্ণ আরও দুটি অস্ত্র ও মাদক পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগে খালেদের গুলশান-২ নম্বরে ৫৯ নম্বর রোডের ৪ নম্বর বাসাটি ঘিরে রাখে র‌্যাবের সদস্যরা।

এদিকে বিকেলে ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালায় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনীতে বেড়ে ওঠা খালেদ ওই ক্লাবের সভাপতি। ওই ক্লাব থেকে ১৪২ নারী-পুরুষকে গ্রেফতারের পর তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়। জব্দ করা হয়েছে কয়েক লাখ টাকা।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ‘মনস্টার’ সম্বোধন করে তাদের পদ থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সভায় যুবলীগের কিছু নেতার কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, খালেদকে গুলশানের বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানে একটি অবৈধ অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গের কারণে আরও দু’টি অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।

র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবের জুয়ার আসর ও বার বসানোর কোনও লাইসেন্স নেই। সেখানে অবৈধভাবে দীর্ঘ দিন ধরে জুয়ার ও মদের আসর বসিয়ে আসছিল একটি চক্র। বুধবারের অভিযানে দুই নারীসহ ১৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছে। ওই ক্লাব থেকে ২৪ লাখ ২৯ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।

খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ বলেছেন, কেউ কোনো অপরাধ করলে যুবলীগ তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে। যুবলীগ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তারা মনে করে আইন তার নিজস্ব গতিতে গতিতে চলবে এবং এতে তারা কোনো হস্তক্ষেপও করবেন না।

জানা গেছে- যুবলীগ নেতা মিল্কী হত্যার পর মতিঝিল এলাকায় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের ছত্রচ্ছায়ায় ঢাকার এক অংশের নিয়ন্ত্রণ আসে খালেদের হাতে।

মতিঝিল, ফকিরাপুল এলাকায় কমপক্ষে ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন খালেদ। খিলগাঁও-শাহজাহানপুর হয়ে চলাচলকারী গণপরিবহন থেকে নিয়মিত টাকা দিতে হয় তাকে। কোরবানির ঈদে শাহজাহানপুর কলোনি মাঠ, মেরাদিয়া ও কমলাপুর পশুর হাট নিয়ন্ত্রণ ছিল তার হাতে।

এছাড়া রাজউক, রেলভবন, ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ভবন, কৃষি ভবন, ওয়াসার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন খালেদ।

Pin It