দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি নিয়ে করা ঐতিহাসিক অযোধ্যা মামলার রায় শনিবার দিতে চলেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় রায় ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
গত ১৬ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে অযোধ্যা জমি বিতর্কের শুনানি শেষ হয়। তবে সে সময় কোনও রায় দেয়নি আদালত।
আগামী ১৭ নভেম্বর অবসর গ্রহণ করবেন রঞ্জন গগৈ। তার আগেই মামলার রায় হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছিল। এর মধ্যেই স্পর্শকাতর এ মামলার রায় দেওয়ার প্রস্তুতিতে প্রশাসনিক মহলে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি গগৈ শুক্রবার রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব এবং পুলিশ প্রধানের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। এর মধ্যেই এদিন রাতে গগৈ অন্য চার বিচারকের সঙ্গে আলোচনা করে অযোধ্যা মামলায় রায় দেওয়ার ওই দিনক্ষণ স্থির করেছেন।
রায়ের পর যাতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি না হয় সেজন্য ভারতের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সব রাজ্যে সতর্কতা জারি করতে বলা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে।উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গতরাতেই লাখেনৌতে শীর্ষ প্রশাসনিক ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেছেন। জরুরি পরিস্থিতি মোকবেলায় লাখ্নৌতে দুটি এবং অযোধ্যায় একটি হেলিকপ্টারও প্রস্তুত রাখতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
অযোধ্যার আশপাশের গ্রামগুলোতে উড়তে শুরু করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশেষ ড্রোন। ৩০টি বম্ব স্কোয়াড চলে গেছে আরো আগেই। অযোধ্যার অধিকাংশ এলাকায় ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত জারি রাখা হবে ১৪৪ ধারাও।
কয়েক দশক ধরে আদালতে বিচারাধীন থেকে রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর হয়ে আছে এ অযোধ্যা মামলা। ২ দশমিক ৭৭ একর জমি নিয়ে এ দ্বন্দ্ব। হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ই এ জমির দাবিদার ।
এই রাম মন্দির ও বাবরি মসজিদের বিষয়টি ছিল ১৯৮০’র দশকের অন্যতম রাজনৈতিক ইস্যু। ষোড়শ শতকে নির্মিত মসজিদটি ১৯৯২ সালে গুঁড়িয়ে দেয় উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। ভগবান রামচন্দ্রের জন্মভূমিতে এই মসজিদ তৈরি করা হয়েছে বলেই তাদের বিশ্বাস। মসজিদটি ভাঙা নিয়ে হিন্দু-মুসলিম সহিংসতায় ভারতজুড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।চলতি বছরের শুরুতে মধ্যস্থতার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এর জন্য একটি কমিটি গঠন করলেও সে চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় পরে আগস্ট থেকে অযোধ্যা মামলার নিয়মিত শুনানি শুরু হয়।