প্রাণঘাতী করোনা প্রাদুর্ভাবের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে যতো দেরি হবে, আমাদের অর্থনীতি আগের অবস্থানে ফিরতেও ততো দেরি হবে।
এরই মধ্যে দেশের অন্তত ১৪টি খাতে সমস্যা তৈরি হয়েছে। লকডাউনে দিনে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হচ্ছে। কাঁচামালের অভাবে দেশের বিভিন্ন শিল্প-কারখানার উৎপাদন সংকুচিত হওয়ার পাশাপাশি অনেক ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
একইভাবে কমে আসছে আমদানিনির্ভর পণ্যের সরবরাহ। এ অবস্থায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশে যদি বিশেষ বিশেষ এলাকায় লকডাউন শিথিল করা না হয়, তাহলে দেশের অর্থনীতি আরো বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে। সুতরাং দেশের ব্যবসা ও অর্থনীতি সচল রাখতে স্বাস্থ্য, খাদ্য ও চিকিৎসা নিরাপত্তা নিশ্চিত করে অত্যাবশ্যকীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বজায় রাখতে হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় অন্যান্য দেশ কী করছে সে আলোকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে আমাদের ক্রমাম্বয়ে লকডাউন শিথিল করার প্রক্রিয়ায় যেতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রসঙ্গত, অতি সংক্রামক করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে সরকার। এ সময় সব ধরনের কল-কারখানাসহ বাইরের সব কাজকর্ম বন্ধ রয়েছে। আগামী ২ মে পর্যন্ত এই সাধারণ ছুটি বাড়ানো হয়েছে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, করোনা ভাইরাস বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। সেটা আগামী দুই মাসের মধ্যে বোঝা যাবে। সেক্ষেত্রে দেশে করোনার প্রভাবটা প্রশস্ত হচ্ছে কি না সেটা বিবেচনায় নিতে হবে। এখনও আমাদের দেশে প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে বেশি হচ্ছে। কবে এই পরিস্থিতি ঠিক হবে আমরা জানি না। কেউই এটা বলতে পারবে না কবে ঠিক হবে। যখন ঠিক হবে তখন ডাটা দিয়ে বোঝা যাবে ক্ষতির পরিমাণ কত হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে করোনার প্রভাবের শুরুটা দেরিতে হয়েছে। তাই আমাদের শেষটাও দেরিতে হবে। সে হিসেবে আমাদের লকডাউনটা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। এই লকডাউন যতো দীর্ঘস্থায়ী হবে ততো বেশি অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে। যখন পরিস্থিতির উন্নতি হবে, সেটা এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ পরেও হতে পারে। তখন আস্তে আস্তে চিন্তাভাবনা শুরু করবো আমরা কিভাবে সব কিছু খুলতে পারবো। যেটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আস্তে আস্তে খোলার কথা চিন্তা করছে। তবে আমরা এখনও সে অবস্থায় যাইনি। আমরা কবে যাবো সেটা তথ্য বলে দিবে, ডাটার ভিত্তিতে আমাদের বুঝতে হবে।
অর্থনীতিবিদ ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, লকডাউন দীর্ঘায়িত হলে অর্থনীতিতে নিঃসন্দেহে বড় রকমের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কারণ বিভিন্ন খাতে উৎপাদন পরিবহ বন্ধ, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ধস নেমেছে। সব মিলিয়ে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। এছাড়া আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলেছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ২ থেকে ৩ শতাংশের মধ্যে হবে। যেখানে সরকারের টার্গেট ছিল ৮.২ শতাংশ। গত অর্থবছরে সরকারের তথ্য অনুসারে প্রবৃদ্ধি ৮. ১৫ শতাংশ ছিল।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রবৃদ্ধি কি হলো না হলো সেটা খুব বড় বিষয় না। বড় বিষয় হচ্ছে মানুষের ন্যূনতম সাহায্য সহযোগিতা দেওয়া। যাতে করে অনাহারে কোন মানুষ মারা না যায়। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর বরাদ্দ বাড়াতে হবে এবং সেগুলো সুষ্টুভাবে বিতরণ করতে হবে। আর কিছুদিন পরে যদি দেখা যায় করোনা প্রকোপের মাত্রাটা কমেছে, তখন আস্তে আস্তে কলকারখানা খুলে দেওয়া যেতে পারে। পরিবহনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। বন্দরগুলোসহ বিভিন্ন দিকে যে সমস্ত সমস্যাগুলো হয়েছে সেগুলো কমানোর জন্য আস্তে আস্তে চেষ্টা করতে হবে।
সিপিডির সিনিয়র গবেষক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে এ মুহূর্তে অর্থনৈতিক বিষয়গুলোকে প্রাধিকার দেওয়ার সুযোগ কম। স্বাস্থ্য ঝুঁকিটাই এই মুহূর্তে সর্বাধিক গুরুত্ব পাওয়া উচিৎ। এজন্য অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য পণ্য উৎপাদন, কৃষিপণ্য উৎপাদন, কৃষিপণ্য ও কাঁচামাল আমদানি এবং জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী উৎপাদন ও আমদানি বিতরণ এই ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ছাড়া অন্যান্য স্থানগুলোতে এখনো অর্থনৈতিক কর্মকান্ড শুরু করবার মতো পর্যাপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। লকডাউন পরিপালনের ক্ষেত্রে যে নিয়ম বা শর্তগুলো বলা হয় সেগুলো আরো কঠোরভাবে পালন করলে আমাদের অত্যন্ত স্বাস্থ্য ঝুঁকির ক্ষেত্রে আমরা আরো কিছু ভালো ফলাফল পেতে পারি। যা আগামীতে আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে আগের অবস্থানে ফিরে আসার সুযোগটি সহজতর হবে।
তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির ক্ষেত্রে যদি দুর্বলতা দেখাই তাহলে অর্থনৈতিক ঝুঁকি গভীরতর হবে। স্বাস্থ্য নিরাপত্তার স্থানে যতো দেরি হবে আমাদের অর্থনীতি আগের অবস্থানে ফিরে আসা ততো দেরি হবে। সুতরাং স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে খাদ্য ও চিকিৎসা নিরাপত্তার জন্য যতটুকু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড দরকার সেটা চালাতে হবে। বাকিটুকু সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্যাকেজের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, যদি এমন হতো, আমরা দুই মাসের প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্য দিয়ে সকল নাগরিকের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারতাম, তাহলে সরকারের পক্ষে সুযোগ ছিল একবারে বড় রকমের নিয়মের ভিতরে জনসাধারণকে কোয়ারেন্টনে রাখার। সেভাবে রাখতে যেহেতু আমাদের সমস্যা হচ্ছে, তাই ধাপে ধাপে যাওয়ার কোন বিকল্প নেই। আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদন, পরিবহন, চিকিৎসা সামগ্রী উৎপাদন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অগ্রাধিকার দিতে হবে।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, করোনায় দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে সেটা নিশ্চিত। এজন্য পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে অন্য দেশগুলো কী করছে সে আলোকে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা যদি কাজে ফিরে আসতে চাই তাহলে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা থাকতে হবে। এজন্য যা যা করনীয় আমাদের করতে হবে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় যারা সংক্রমিত হচ্ছে তাদের জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসা নিশ্চিত করার মতো প্রস্তুতি নিয়ে আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা এভাবে সব সময় সব কিছু বন্ধ রাখতে পারবো না। আবার হঠাৎ সব কিছু খুলে দিতেও পারবো না। এজন্য পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে আমাদের ক্রমানয়ে যেতে হবে। যেমন এখন যে কারখানাগুলোর রপ্তানির অর্ডার আছে তাদের কিছু শর্ত দিয়ে খোলা হলো। এরপর পরিবহণের ক্ষেত্রেও সেটা করতে হবে এবং তা যেন বাস্তবায়ন হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে করে দেশের ব্যবসা ও অর্থনীতি সচল থাকে।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের একদল গবেষক তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় চলমান লকডাউনে দিনে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হচ্ছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির তিনটি বড় খাত- কৃষি, শিল্প ও সেবা খাত ধরে ক্ষতির অনুমিত হিসাব দেওয়া হয়েছে এই সমীক্ষা প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে লকডাউনের কারণে প্রতিদিন কৃষিতে ক্ষতি হচ্ছে ২০০ কোটি টাকা। শিল্প খাতে দিনে ক্ষতি হচ্ছে এক হাজার ১৩১ কোটি টাকা। উৎপাদন ও নির্মাণ খাতে ক্ষতির মাত্রা প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ খাতে প্রতি দিনের অনুমিত ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা। সেবা খাতে দিনে ২০০০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে৷
প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থনৈতিক ক্ষতি সবচেয়ে প্রকট আকার ধারণ করেছে সেবা খাতে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী বেচা-কেনা এবং জরুরি সেবা ছাড়া এই খাত মূলত অবরুদ্ধ। সব ধরনের যোগাযোগ (সড়ক, রেল, নৌ ও আকাশ পথ), পর্যটন, হোটেল ও রেস্টুরেন্ট, রিয়েল এস্টেটসহ সব ধরনের সেবা একেবারেই বন্ধ। স্বাস্থ্য খাতের বেসরকারি অংশটিতেও এক প্রকার অচলাবস্থা বিরাজ করছে। সব মিলিয়ে সেবা খাতে প্রতি দিনের অনুমিত চলতি ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে দুই হাজার কোটি টাকা ।
এবিষয়ে গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ জানান, বাংলাদেশ সরকারও বড় অঙ্কের (প্রায় ৯৫ হাজার কোটি টাকা) প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এই প্যাকেজ অর্থনীতিতে কতটুকু গতি ফিরিয়ে আনতে পারবে তা নির্ভর করবে স্বল্প মেয়াদি, মধ্য মেয়াদি এবং দীর্ঘ মেয়াদি মোট ক্ষতির পরিমাণ এবং প্রণোদনা প্যাকেজের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের উপর।
তিনি বলেন, ২৬ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৩১ দিনের অবরুদ্ধ অবস্থায় অনুমিত ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে কমপক্ষে ১ লাখ ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। যেহেতু পুরো এপ্রিল মাস করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তাই ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন অব্যাহত থাকলে এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
লকডাউন অবস্থা পুরো মে মাস এমনকি জুন মাসেও অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “যদি তাই হয় তাহলে মে মাস শেষে অনুমিত ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ১৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের মোট দেশীয় উৎপাদনের প্রায় ৯ শতাংশ।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি, মে মাস শেষে অর্থনীতি ধাপে ধাপে উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে এবং সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মাধ্যমে অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করবে। যদি মে মাসের পরেও অর্থনীতি উন্মুক্ত করা সম্ভব না হয়, তাহলে রাজস্ব আদায় এবং জিডিপির প্রবৃদ্ধিসহ সামগ্রিক অর্থনীতিতে এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে, যা কাটিয়ে ওঠা অনেক কঠিন হতে পারে। ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার উপায়গুলো তাই আগে থেকেই খুঁজতে হবে।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা প্রাদুর্ভাবের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। এরই মধ্যে দেশের অন্তত ১৪টি খাতে সমস্যা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিবেদনে তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পোশাক খাতের অ্যাক্সেসরিজ, প্রসাধন, বৈদ্যুতিক পণ্য, পাট সুতা, মুদ্রণ শিল্প, চিকিৎসা সরঞ্জাম, চশমা, কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ, ইলেকট্রনিক পণ্য, কাঁকড়া ও কুঁচে এবং প্লাস্টিক শিল্পসহ মোট ১৩ খাতের ক্ষতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
ট্যারিফ কমিশনের প্রাথমিক হিসাব বলছে, আমদানি-রপ্তানি সংকুচিত হওয়ায় কয়েকটি খাতে অন্তত ৬০০০ কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে কাঁচামালের অভাবে দেশের বিভিন্ন শিল্প-কারখানার উৎপাদন সংকুচিত হওয়ার পাশাপাশি অনেক ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একইভাবে কমে আসছে আমদানিনির্ভর পণ্যের সরবরাহ।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাষে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশে এ বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে শতকরা ১.৮ ভাগ থেকে ২.৮ ভাগের মধ্যে। অর্থাৎ এ অঞ্চলে প্রবৃদ্ধি থাকতে পারে শতকরা ৩ ভাগের নিচে। অথচ ৬ মাস আগেও পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল এই প্রবৃদ্ধি হবে শতকরা ৬.৩ ভাগ। বিশ্বব্যাংকের এই পূর্বাভাষ যদি সত্যি হয় তাহলে এটাই হবে এ অঞ্চলের দেশগুলোর গত ৪০ বছরের মধ্যে সবেচেয়ে খারাপ আর্থিক পারফরমেন্স। যদি লকডাউন দীর্ঘায়িত হয় তবে বিশ্বব্যাংকের ওই রিপোর্টে হুঁশিয়ারি দেয়া হয় যে, অর্থনৈতিক এই মন্দা অবস্থা ২০২১ সাল পর্যন্তও বিস্তৃত হতে পারে। এ সময়ে প্রবৃদ্ধি শতকরা ৩.১ ভাগ থেকে ৪ ভাগ অর্জিত হতে পারে। আগে এই প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল শতকরা ৬.৭ ভাগ। বাংলাদেশের জিডিপি অর্থাৎ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গত অর্থবছরে ছিল ৮.২ শতাংশ। এই বৈশ্বিক ঋণদান সংস্থার পূর্বাভাসে শুধু এ বছর নয়, বলা হয়েছে আগামী অর্থবছরে তা আরও কমে দাঁড়াবে ১.২ থেকে ২.৯ শতাংশে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে একটু ঘুরে দাড়াঁলেও তা ৪ শতাংশের নিচেই থাকবে।