দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কূটনীতি একসঙ্গে অনুসরণ করতে ইউরোপে অবস্থানরত বাংলাদেশের দূতদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার লন্ডনের তাজ হোটেলে বাংলাদেশের দূতদের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশ দেন। খবর ইউএনবির
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনৈতিক কূটনীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিষয়সমূহের ওপর আমাদের আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে, যাতে বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন অব্যাহত থাকে।’
সম্মেলন শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, সম্মেলনে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশের ১৫ জন রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার এবং স্থায়ী প্রতিনিধিরা যোগ দেন। কর্মসূচি অনুযায়ী প্রত্যেক দূত নিজ নিজ মিশনের কর্মকাণ্ড, বাংলাদেশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশের কূটনৈতিক বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিষয়ে আলোকপাত করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলাদেশি দূতদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেন।
ইউরোপে দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করা, ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন এবং দেশে আরও বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
রোহিঙ্গা ইস্যু ও অভিবাসনের পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী নিয়েও সম্মেলনে আলোচনা হয়।
দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা কূটনীতিকদের বিদেশি দেশসমূহের সঙ্গে গভীর ও বৃহত্তর সম্পর্ক স্থাপনের জন্য সময় উপযোগী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক্ষেত্রে আমাদের বিশেষ করে ইউরোপীয় দেশগুলোতে বিনিয়োগ, বাণিজ্য এবং দক্ষ জনশক্তি রফতানি বৃদ্ধির সুযোগ অন্বেষণ করা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন একটি বড় ও দক্ষ যুবশক্তি রয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী চাকরির বাজারের চাহিদা মেটাতে পারে।
দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা নয়টি ভিন্ন ভাষা শিখতে সহায়তা করার জন্য ইতিমধ্যেই অ্যাপস চালু করেছে।
বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে যোগাযোগের সেতু হতে পারে বাংলাদেশ।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান ও পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে অংশ নেয়া বাংলাদেশের দূতরা হলেন– আবু জাফর (অস্ট্রিয়া), মোহাম্মদ শাহাদত হোসেন (বেলজিয়াম), মুহম্মদ আবদুল মুহিত (ডেনমার্ক), কাজী ইমতিয়াজ হোসেন (ফ্রান্স), ইমতিয়াজ আহমেদ (জার্মানি), জসিম উদ্দিন (গ্রিস), আবদুস সোবহান সিকদার (ইতালি), শেখ মোহাম্মদ বেলাল (নেদারল্যান্ডস), মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান (পোল্যান্ড), রুহুল আলম সিদ্দিক (পর্তুগাল), ড. এস এম সাইফুল হক (রাশিয়া), হাসান মাহমুদ খন্দকার (স্পেন), নাজমুল ইসলাম (সুইডেন), শামীম আহসান (সুইজারল্যান্ড) ও সাইদা মুনা তাসনীম (যুক্তরাজ্য)।
যুক্তরাজ্যে সরকারি সফরে শুক্রবার লন্ডন পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফর শেষে আগামী ৫ আগস্ট দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।