আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

image-160547-1592853411

গণতান্ত্রিকভাবে জন্ম নেওয়া উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গৌরবোজ্জ্বল ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী । ৭২ বছরে পা দিল টানা তৃতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রের ক্ষমতায় থাকা দলটি। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা অর্জনে নেতৃত্ব দেয় আওয়ামী লীগ। ‘বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ’—ইতিহাসে এই তিনটি নাম একই সূত্রে গাঁথা।

আওয়ামী লীগ মানেই বাঙালি জাতীয়তাবাদের মূল ধারা। আওয়ামী লীগ মানেই সংগ্রামী মানুষের প্রতিচ্ছবি। উপমহাদেশের রাজনীতিতে গত ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজেদের অপরিহার্যতা প্রমাণ করেছে দলটি। এদেশের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে আওয়ামী লীগের ভূমিকা প্রত্যুজ্জ্বল। ৫২-র ভাষা আন্দোলন, ৬২-র ছাত্র আন্দোলন, ৬৬-র ছয় দফা, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর যুগান্তকারী নির্বাচন আর ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা আন্দোলন—সবখানেই সরব উপস্থিতি ছিল আওয়ামী লীগের। আওয়ামী লীগই একমাত্র দল, যাদের বাংলাদেশের ইতিহাসে টানা তিন মেয়াদে সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশেমের নেতৃত্বাধীন তত্কালীন বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের একাংশের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার টিকাটুলীর কে এম দাস লেন রোডের রোজ গার্ডেন প্যালেসে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ প্রতিষ্ঠিত হয়, যার সভাপতি ছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক টাঙ্গাইলের শামসুল হক। তখন কারাবন্দি অবস্থায় তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৫ সালে দলের তৃতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে দলের নতুন নামকরণ হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দলের নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১৯৮১ সালের কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নির্বাচিত করা হয়। সর্বশেষ ২০১৯ সালে দলের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলেও তাকেই সভাপতি পদে বহাল রাখা হয়।

আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণীতে তিনি সংগঠনের অগণিত নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীসহ দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্য জাতীয় নেতাদের।

কর্মসূচি :আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি যথাযথ মর্যাদায় দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করার জন্য সব স্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। করোনা ভাইরাসের কারণে সীমিত পরিসরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সূর্যোদয়ের সময় কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। ঢাকার ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে দলের শীর্ষ নেতাদের শ্রদ্ধা নিবেদন। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে দলের স্বল্পসংখ্যক সদস্যের প্রতিনিধিদল টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করবেন। বিকালে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। রাত সাড়ে ৮টায় ‘গণমানুষের দল আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ (https://www.facebook.com/awamileague.1949/) ও ইউটিউব চ্যানেলে (https://www.youtube.com/user/myalbd/) সরাসরি ওয়েবিনারটি দেখা যাবে।

জেপির শুভেচ্ছা :আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দলটির নেতাকর্মীদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুু এমপি এবং দলের সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম। গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে জেপি নেতৃদ্বয় বলেন, এই সংগঠনের নেতৃত্বেই একসময় ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, সংগ্রামী জননেতা মওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশসহ প্রখ্যাত নেতৃবৃন্দ। আমরা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই মুহূর্তে গভীর শ্রদ্ধা ভরে সব জাতীয় নেতাকে স্মরণ করছি। তারা আরো বলেন, জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পরিচালিত হচ্ছে এবং এই সংগঠনের কাছে দেশবাসীর দৃঢ় প্রত্যাশা তারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ কয়েম করবেন।

Pin It