আওয়ামী লীগের সম্মেলন আজ, সবার চোখ সোহরাওয়ার্দীতে

321235289_807498653683333_6627319140105552610_n-76cf9125920bdba7bcb677c3910c5b2c

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ (২৪ ডিসেম্বর)। ‘উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে হতে যাচ্ছে টানা ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা দলটির সম্মেলন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় সম্মেলন থেকে দলীয় কর্মকৌশল নির্ধারণে নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই কাল সবার নজর থাকছে বাংলাদেশের বৃহৎ দলটির নতুন নেতৃত্বের দিকে।

ইতোমধ্যে সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। সম্মেলনে অংশ নিতে সারা দেশ থেকে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরা ইতোমধ্যে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। সাড়ে ৮ হাজার কাউন্সিলর এবং ২৫ হাজার ডেলিগেট এতে অংশ নেবেন।

সম্মেলনে অতিথিসহ লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে বলে জানানো হয়েছে। ৫০ হাজার লোকের খাবারের ব্যবস্থাও রয়েছে। দুপুরে নামাজ ও খাবারের বিরতির পর বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এ অধিবেশনে আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় নেতৃত্বে কারা আসছেন, তা নির্ধারণ হবে।

আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে ঢাকা মহানগরের যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে দলটি। সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। চলতি মেয়াদে শেষ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিস্তারিত তুলে ধরেন।

বাংলাদেশের জন্মের সঙ্গে নাড়ির সম্পর্ক এ দলটির সভাপতি পদ নিয়ে আগ্রহ না থাকলেও বরাবরের মতো সবার দৃষ্টি সাধারণ সম্পাদক পদের দিকে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, রাজনৈতিক মহল সর্বোপরি দেশবাসীর প্রতি আগ্রহের জায়গাটি তৈরি হয় এ পদ নিয়ে। কে হবেন সাধারণ সম্পাদক, প্রতিটি সম্মেলনে এটি মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। দলের দ্বিতীয় শীর্ষ এ পদটিতে পরিবর্তন আসবে নাকি বর্তমান নেতৃত্ব হ্যাট্রিক করবেন, ঘুরেফিরে সবার আলোচনা সেটা নিয়েই।

১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দলের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর টানা ৯ বার দায়িত্ব পালন করছেন। সম্মেলনে এই পদে গত ৪২ বছরে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী দেখা যায়নি। তবে গত কয়েকটি সম্মেলনে তিনি বরাবরই বয়সের ভার দেখিয়ে বিদায় নেওয়ার কথা বলেছেন। প্রতিবার কাউন্সিলদের তীব্র আপত্তিতে তাকে সভাপতির পদেই থাকতে হয়। এবারও নিশ্চয়ই তার ব্যতিক্রম হবে না।

ওবায়দুল কাদের তৃতীয় মেয়াদে সাধারণ সম্পাদক হয়ে রেকর্ড করবেন, নাকি শেখ হাসিনা নতুন কোনও রানিং মেট বেছে নেবে, এই আলোচনা সর্বত্র। দ্বিতীয় আলোচনায় দলের কয়েকজনের নামও বারবার উঠে আসছে। এ ক্ষেত্রে সভাপতিমণ্ডলীর চার সদস্য ও চার যুগ্ম সম্পাদকের নাম শোনা যাচ্ছে। অবশ্য ওবায়দুল কাদের টানা তৃতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক হয়ে নতুন রেকর্ড করার সম্ভাবনার কথা জানাচ্ছে দলের বড় অংশ। তারা মনে করছে, নতুন কাউকে নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট না করে নির্বাচনের আগে পরীক্ষিত ব্যক্তিকেই হয়তো বেছে নেবেন শেখ হাসিনা। ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক হলে সেটা এক অর্থে রেকর্ডই হবে। অতীতে একই ব্যক্তি তিন বা ততোধিক সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করলেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগে সেটা দেখা যায়নি।

দলের সাধারণ সম্পাদক প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের ইতোমধ্যে গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘সভানেত্রী যিনি আছেন, তিনি আমাদের অপরিহার্য। তিনি আমাদের ঐক্যের প্রতীক। শেখ হাসিনাকে সমর্থন করবেন না, এমন একজন কাউন্সিলরকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না। কাজেই এ নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। সাধারণ সম্পাদক পদে অনেকেরই ইচ্ছা থাকতে পারে। আমার জানামতে, ১০ জন অন্তত প্রার্থী আছেন, যারা সাধারণ সম্পাদক হতে চান। কাজেই কে হবেন, সেটা নেত্রীর ইচ্ছা এবং কাউন্সিল অধিবেশনে সেখানে কাউন্সিলরদের মতামতে এর প্রতিফলন ঘটবে।’

এদিকে আওয়ামী লীগের আগের কয়েকটি জাতীয় সম্মেলনের মতো এবারও বঙ্গবন্ধু পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে ঘিরে নেতাকর্মীর মধ্যে চলছে নানা আলোচনা। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে অন্যবারের চেয়ে, বিশেষ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুল এবং শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাঠামোতে আসছেন কি না, তা নিয়ে নেতাকর্মীর মনে ব্যাপক কৌতূহল। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সজীব ওয়াজেদ জয় ইতোমধ্যে দেশে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাকে সম্মেলনে অংশগ্রহণের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দলের জাতীয় কমিটির সভায় কয়েকজন নেতা বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রসঙ্গটি দলীয় সভাপতির নজরে আনেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন সবাই বড় হয়েছে। রাজনীতিতে আসবে কি আসবে না, সেটি তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়। তারা যদি রাজনীতিতে যুক্ত হতে চায়, হতে পারে। এ বিষয়ে আমার কোনও আপত্তি নেই।’

এদিকে সভাপতি শেখ হাসিনাও গত দুই বছরে বারবারই তার বয়স বেড়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। আর কত দিন দায়িত্ব পালন করবেন, সেই বিষয়টি সামনে এনেছেন। বিশেষ করে নিজের বয়স ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর দেশের গড় বয়সের উদ্ধৃতি দিয়ে একাধিকবার এ কথা বলেছেন। এ ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে দলের হাল ধরতে যোগ্য করে ‍তুলতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু পরিবারের নতুন কোনও সদস্য এলে সেটা অপ্রত্যাশিত হবে না।

শনিবার জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে আসার পর আধঘণ্টা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হবে। এরপর শোক প্রস্তাব উত্থাপন করবেন দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ওবায়দুল কাদের। স্বাগত বক্তব্য দেবেন অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক শেখ ফজলুল করিম সেলিম। শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হবে। পরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শুরু হবে কাউন্সিল অধিবেশন। এই অধিবেশনে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। গঠনতন্ত্রে কোনও পরিবর্তন আসবে না।

বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন দূতাবাসপ্রধানকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। তবে এবার বিদেশের কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। বৈশ্বিক পরিস্থিতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক মন্দার কারণে সম্মেলনে এবার বড় আয়োজন করা হয়নি। এক দিনেই শেষ হবে সম্মেলনের কার্যক্রম। বাজেটও কাটছাঁট করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার আদলে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মঞ্চটি তিন স্তরের। প্রথম সারিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসবেন দলের সিনিয়র নেতারা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারিতে বসবেন অন্যরা। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের ১৪০ নেতা মঞ্চে থাকবেন।

সম্মেলনের প্রস্তুতির বিষয়ে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলন শুরু হবে। সম্মেলন মঞ্চে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা বসবেন। বিকেল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হবে।

সম্মেলনের শুরুতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করবেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া ৭৮টি সাংগঠনিক জেলা ইউনিটের সভাপতি-সম্পাদক নির্ধারিত জায়গায় দাঁড়িয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করবেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে একমাত্র আওয়ামী লীগ অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চা করে। সংগঠনের গঠনতন্ত্র মেনে নিয়মিত সম্মেলন করে, অন্য কোনও দল আছে কি না জানা নেই।’

তিনি বলেন, জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা দেশের মানুষকে স্বতঃস্ফূর্ত এ বার্তা দিতে চাই, আমরা জনগণের পাশে আছি, পাশে থাকবো। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে কাজ করবো।

জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি গঠন করা হলে সেখানে বড় ধরনের রদবদল না হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ২২তম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন মুখ আসছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এবারের সম্মেলনে যে কমিটি হবে, সেখানে তেমন একটা পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম। নির্বাচনের পর আমরা পরবর্তী সম্মেলন আগামও করতে পারি, সে রকমও চিন্তাভাবনা আছে। তখন একটা বড় ধরনের পরিবর্তন হবে। আপাতত বড় ধরনের কোনও পরিবর্তনের ব্যাপারে ভাবছি না।’

বর্তমান কমিটির বিতর্কিতরা বাদ পড়বে কি না প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘আমরা কেউ পারফেক্ট মানুষ না, ভুলত্রুটি নিয়েই মানুষ। কাজেই পূর্ণতা খুঁজতে গেলে অনেক কিছুই চিন্তাভাবনা করতে হবে। বিতর্কিত ব্যক্তিদের ব্যাপারে আমাদের চিন্তাভাবনা আছে।’

শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নির্দেশনা অনুযায়ী ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিতব্য উদ্বোধনী অধিবেশনে আমন্ত্রিত অতিথিবর্গ (বিশেষ দাওয়াত কার্ডধারী), বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিরা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, জাতীয় সংসদ সদস্যরা এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ (আইইবি) সংলগ্ন অথবা শিখা চিরন্তন গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্যে কোনও প্রকার পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় সবার ব্যক্তিগত গাড়ি ডিএমপি পুলিশের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত স্থানে পার্কিং করতে হবে। এ ছাড়া ২২তম জাতীয় সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সব কাউন্সিলর, ডেলিগেট ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বাংলা একাডেমি, রমনা কালী মন্দির, টিএসসি ও চারুকলা অনুষদ-সংলগ্ন গেট দিয়ে প্রবেশ করতে হবে।

এতে আরও বলা হয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এই নির্দেশনা মেনে চলার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

Pin It