রাজনৈতিক ও আর্থিক সুবিধা নিতে এখন বঙ্গবন্ধুর নাম ও ছবি ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা কামাল হোসেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বার্ষিকীতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার গণফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তব্যে এই অভিযোগ তোলেন দলটির সভাপতি কামাল।
তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু কী স্বপ্ন দেখেছিলেন- এটা ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষকে বোঝান। মানুষ এটা বুঝলেই কিন্তু রুখে দাঁড়াবে। জনগণের ক্ষমতা তাদের স্বার্থে না লাগিয়ে, উনার ছবি দেখিয়ে, উনার ছবি নিয়ে নিজের আখের গুছাচ্ছে। এটা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ষোলআনা পরিপন্থি।”
বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রী ও এক সময়ের আওয়ামী লীগ নেতা কামাল বলেন, এখন বঙ্গবন্ধুর নাম করে তার আদর্শের বিপরীত কাজ হচ্ছে।
“আমি একদম হলফ নিয়ে বলতে পারি, উনি (বঙ্গবন্ধু) এদেশে স্বৈরশাসন থাকবে, এটা কোনোদিনই ভাবতেই পারেননি। উনি জীবন দিয়েছেন এজন্য যে এদেশে গণতন্ত্র থাকবে, নির্ভেজাল গণতন্ত্র, নামকাওয়াস্তে গণতন্ত্র নয়।”
আওয়ামী লীগ ছেড়ে আসার পর এখন বিএনপির সঙ্গে জোট গড়া কামাল অভিযোগ করে আসছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে এখন স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে।
তিনি বলেন, “যদি আজকে কেউ মনে করে যে, রাষ্ট্রের মালিকানা কোনো এক ব্যক্তির বা এক দলের, তাহলে বঙ্গবন্ধুকে অসম্মান করা হবে, বঙ্গবন্ধুর কথাকে প্রত্যাখ্যান করা হবে। কারণ তিনি সংবিধানে লিখে দিয়ে গেছেন- জনগনই ক্ষমতার মালিক।”
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির প্রধান কামাল হোসেন বলেন, “দেশের মালিক জনগণ, এটা বঙ্গবন্ধুর কথা। এটা সংবিধানে লেখা আছে। সেই সংবিধানে এক নম্বর স্বাক্ষর বঙ্গবন্ধুর।
“গণতন্ত্রের ব্যাখ্যাও উনি দিয়ে গেছেন- এদেশে গণতন্ত্র মানে জনগণ ক্ষমতার মালিক সকল স্তরে। নির্বাচিত মানে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত।”
গত ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে গণফোরাম সভাপতি বলেন, “নির্বাচন পদ্ধতিকে করে দেওয়া হয়েছে অবাধ নির্বাচনের ষোলআনা উল্টা। মানুষ যাকে ভোট দিতে চায় না, মানুষ যার উল্টাটা চায়, তারা সামনে এসে বলে- আমরা নির্বাচিত!।”
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও তার শিক্ষা সারাদেশে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান কামাল। এজন্য সংবিধানের কপি মুদ্রণ করে তৃণমূলে পাঠানোর পরামর্শ দেন তিনি।
এই রাজনৈতিক সংগ্রামে সবার মধ্যে ঐক্যের গুরুত্ব তুলে ধরেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা কামাল।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি আবু সাইয়িদ; আলোচনা করেন সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোকাব্বির খান, মহসিন রশিদ, মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশতাক হোসেন, আমীন মোহাম্মদ আফসারী।