আজ থেকে নতুন দিগন্তের সূচনা: হামাস কমান্ডার

image-726232-1696694771

ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন হামাসের সামরিক কমান্ডার মুহাম্মদ দেইফ। ফিলিস্তিনবাসীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আপনাদের কাছে যদি একটি বন্দুকও থাকে, তবে তা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। ট্রাক, গাড়ি, কুড়াল নিয়ে মাঠে নামুন। আজ থেকে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।

এর আগেই ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। শনিবার গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চল লক্ষ্য করে পাঁচ হাজার রকেট ছুড়েছে হামাস। হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৪০ ইসরাইলি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন সাত শতাধিক।

বিষয়টিকে আমলে নিয়ে গাজা উত্যকায় ‘যুদ্ধ পরিস্থিতি’ ঘোষণা করেছে ইসরাইল। দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, সকাল সাড়ে ৬টা থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইলে ২২০০ রকেট ছুড়েছে হামাস। এ ছাড়াও স্থল, আকাশ ও নৌপথে হামাসের সদস্যরা ইসরাইলে প্রবেশ করছেন।

তবে হঠাৎ কেন এমন কঠোর সামরিক অবস্থান নিল হামাস? আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার তথ্যমতে, ইসরাইলি দখলদারিত্বের ইতি টানতেই হামাস এ সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে। ‘অপারেশন আল-আকসা স্টর্ম’ পরিচালনার মাধ্যমে দশকের পর দশক ধরে চলা ইসলাইলি দখলদারিত্ব, শোষণ ও বঞ্চনার জবাব দেওয়া হচ্ছে বলে আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন হামাস মুখপাত্র খালেদ কারামি।

তিনি বলেন, আমরা চাই বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্র এবং পুরো বিশ্বের মানুষ আমাদের ওপর পরিচালিত অত্যাচারের কথা জানুক। আমরা চাই আমাদের মানুষ এবং আমাদের ভূখণ্ডের ওপর, আমাদের পবিত্র প্রার্থনা কেন্দ্র আল-আকসার দখলদারিত্ব থেকে ইসরাইলিরা সরে যাক। অনেক বছরের পুঞ্জিভূত অত্যাচার ও দখলদারিত্বের জবাব দিতেই আমরা প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করেছি।

ইসরাইলি দখলদারিত্ব এবং শোষণের অবসানে বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে হামাসের সামরিক কমান্ডার মুহাম্মদ দেইফ বলেন, আমরা অপারেশন আল-আকসা স্টর্ম শুরু করে দিয়েছি। এ অভিযানের মধ্য দিয়ে বিশ্বের বুকে ইসরাইলি দখলদারিত্বের অবসান হবে।

দেশপ্রেমিক সব ফিলিস্তিনিকে যুদ্ধে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা ইসরাইলে প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে হারেৎজ। সংবাদমাধ্যমটির তথ্য বলছে, হামাসের সদস্যরা ইসরাইলের দখলে থাকা বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে পড়েছেন। তাদের হাতে বেশ কিছু ইসরাইলি সেনা আটক হয়েছেন।

হামলার ঘটনায় ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে হামাস ‘গুরুতর’ ভুল করেছে। আইডিএফ সেনারা (ইসরাইলি সেনাবাহিনী) প্রতিটি অবস্থানে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, রকেট হামলার বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের প্রধানরা বৈঠক করবেন।

এদিকে আল-আকসা স্টর্মের মধ্য দিয়ে আবারও মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। হামাসের হামলাকে সমর্থন দিয়েছে ইরান। দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উপদেষ্টা রহিম সাফাভি ইরানের পক্ষ থেকে সমর্থন জানিয়েছেন।

তিনি সংবাদমাধ্যম ইসনাকে বলেন, আমরা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের শুভেচ্ছা জানাই। ফিলিস্তিন এবং জেরুজালেম স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ফিলিস্তিনিদের সমর্থন জানিয়ে যাবো।

তবে সৌদি আরব ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা ফিলিস্তিনি একটি গোষ্ঠী ও দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর মধ্যে চলমান ঘটনা লক্ষ্য করছি। যা ভয়াবহ সহিংসতার দিকে যাচ্ছে।

Pin It