প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন যুবলীগ নেতা মো. শফিকুল ইসলাম।
শিক্ষা ভবনের ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত শফিকুল যুবলীগের বিগত কমিটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এক সময় ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হল শাখার সভাপতি ছিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুবলীগ নেতাদের কর্মকাণ্ডে উষ্মা প্রকাশের পর সেপ্টেম্বরে ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে অভিযান চালিয়ে ক্যাসিনো পরিচালনায় যুবলীগ-কৃষক লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি করা জে কে শামীমকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর আরও অনেকের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। গত ২২ নভেম্বর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে ঢাকা-১ এ কমিশনের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী বাদী হয়ে শফিকুলের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। মামলায় তার বিরুদ্ধে অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ১৪ কোটি ৪১ লাখ ১৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
বৃহস্পতিবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে আত্মসমর্পণ করে ওই মামলায় জামিন চান শফিকুল ইসলাম।
শফিকুলের পক্ষে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান মানিক ও শাহিনুর রহমান জামিন শুনানি করেন। অপরদিকে দুদকের পক্ষে মীর আহম্মেদ আলী সালাম জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন বলে দুদকের কৌঁসুলি মীর আহম্মেদ আলী সালাম জানান।
শফিকুলের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগে বলা হয়, তিনি ২০১৮-১৯ করবর্ষ পর্যন্ত তার আয়কর নথিতে মোট সাত কোটি ১২ লাখ ৩৭ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ দেখালেও সংশ্লিষ্ট তথ্য বিশ্লেষণে ওই সব সম্পদের অর্জন মূল্য অনেক বেশি। তদন্তের সময় এ বিষয়ে নিরপেক্ষ প্রকৌশলীর মতামতসহ অন্যান্য তথ্য পর্যালোচনা করা হয়। এসব সম্পদ অর্জনের পক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
“শফিকুল অবৈধভাবে অর্জিত টাকায় এসব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন। দুদকের হিসাবে ১৪ কোটি ৪১ লাখ ১৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন তিনি।”
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য এবং বিভিন্ন গোপন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য উল্লেখ করে মামলায় বলা হয়, শফিকুল অবৈধ উপায়ে নামে-বেনামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ অর্জন করেছেন। ওই সম্পদ সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ প্রক্রিয়া জটিল ও সময়সাপেক্ষ বিধায় তদন্তের সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় তথ্য সংগ্রহ করা হবে। সঠিক তথ্যপ্রমাণ সাপেক্ষে তার অর্জিত সম্পদের পরিমাণ অনেক বাড়বে।
শফিকুল ইসলাম তার নিজ নামে বা স্ত্রী-সন্তান কিংবা অন্য কারও নামে আরও সম্পদ অর্জন করেছেন কি না, সে বিষয়েও তদন্তে বের হলে আমলে নেওয়া হবে।