আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের

Untitled-1-379-600x337

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢলের তিন বছর পূর্তিতে কফি আনানের নেতৃত্বে পরিচালিত অ্যাডভাইজরি কমিশনের দেওয়া সুপারিশ বাস্তবায়নে মিয়ানমারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র মরগান অর্টাগাস এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।

বুধবার ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র মরগান অর্টাগাস এক বিবৃতিতে বলেন, হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুর উপর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংস হামলার তিন বছর হয়ে গেলো। যুক্তরাষ্ট্র ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার ও দোষীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি পুনর্ব্যক্ত করছে। এছাড়াও রাখাইন রাজ্যে সংঘর্ষ বাড়ার প্রেক্ষাপটে আমরা সহিংসতার অবসান, সংলাপ, স্থানীয় জনগণের সুরক্ষায় অব্যাহত প্রচেষ্টা ও মিয়ানমারে মানবিক সহায়তার বাধামুক্ত প্রবেশের দাবি জানাচ্ছি।

‘মিয়ানমারে এখনো স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যা ও হাজার হাজার মানুষের বাস্তুচ্যুতির ঘটনা ঘটায় যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগমুক্ত হতে পারছে না, কারণ এ ধরনের পরিস্থিতি শরণার্থী ও অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা কমায় এবং শান্তির সম্ভাবনা নষ্ট করে। ’

আমরা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন শরণার্থী ও অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষদের নিরাপদে, স্বেচ্ছায়, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করেন। একইসঙ্গে তারা যেন রাখাইন রাজ্য বিষয়ে কফি আনানের নেতৃত্বে পরিচালিত অ্যাডভাইজরি কমিশনের দেওয়া সুপারিশ বাস্তবায়নে জোরালো প্রচেষ্টা করে।

‘ক্ষতিগ্রস্ত সবার মানবিক দুর্ভোগ লাঘবে ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৯৫১ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আমরা ৮ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অব্যাহত উদারতার আন্তরিক প্রশংসা করি। পাশাপাশি এই সংকট সমাধানে বিশ্বের অন্য দেশের প্রতি প্রচেষ্টা জোরদার করার আহ্বান জানাই। ’

যুক্তরাষ্ট্র ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার পাওয়া নিশ্চিত করতে ও নৃশংসতার জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছে। গৃহীত পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ, গুরুতর মানবাধিকার লংঘনে জড়িত শীর্ষ সামরিক নেতা ও সামরিক বাহিনীর ইউনিটগুলোর উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ, জাতিসংঘের তদন্ত প্রক্রিয়াকে সমর্থন করা এবং মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) কার্যক্রমে পুরোপুরিভাবে অংশ নিতে ও আদালতের রায় মেনে নিতে উত্সাহিত করা।

যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের কর্তৃত্ববাদী শাসনের উত্তরাধিকার কাটিয়ে উঠতে এবং গণতন্ত্রের প্রসার ও শান্তি অর্জনের জন্য সেখানকার জনগণের প্রচেষ্টার সঙ্গে অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখবে।

Pin It