যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউচির উচ্চ জনসমর্থন হারের প্রশংসা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প, এরপর খেদের সঙ্গে বলেছেন ‘আমাকে কেউ পছন্দ করে না’।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের প্রতি নিজের সমর্থনের পক্ষে কথা বলার সময় ফাউচির প্রসঙ্গ আসে।
ফাউচি ট্রাম্পের করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্সের অন্যতম সদস্য। তিনি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি এবং সংক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষায় অনেক আমেরিকান তার পরামর্শ আন্তরিকতার সঙ্গে অনুসরণ করে।
অপরদিকে ট্রাম্প মহামারী যেভাবে সামলানোর চেষ্টা করেছেন তা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। এতে নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনের কাছে পরাজয়ের ঝুঁকির মুখে পড়েছেন তিনি। ভোটারদের মধ্যে নিজের অবস্থানের উন্নতি ঘটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে।
করোনাভাইরাস চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার করা উচিত নয় বলে মত অধিকাংশ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের, কারণ এই ওষুধ ব্যবহারে হৃদযন্ত্রের সমস্যাসহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বেশ কিছু গবেষণার ফলাফলে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার পর যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন গত মাসে জরুরিক্ষেত্রে ওষুধটি ব্যবহারের অনুমোদন বাতিল করেছে।
তারপরও ট্রাম্প বলেছেন, তিনি অনুভব করেছেন ওষুধটি করোনাভাইরাস সংক্রমণের ‘প্রাথমিক পর্যায়ে’ কাজ করে।
ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি ও তার প্রশাসন যেভাবে করোনাভাইরাসের মোকাবেলা করছেন তাতে তাদেরও প্রশংসা পাওয়া উচিত, শুধু ফাউচি বা টাস্ক ফোর্সের অপর বিশিষ্ট সদস্য ডেবরা বার্ক্সের নয়।
“তিনি আমাদের প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করছেন আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা অনেক বেশি করেছি, সে এবং অন্যরা, ড. বার্ক্স এবং অন্যরা, তারা চমৎকার, অনুমোদন করছি; আর উচ্চ জনসমর্থন পেলেন তিনি। তাই কেন ভাইরাসের বিবেচনায় আমার ও প্রশাসনের উচ্চ জনসমর্থন নেই? আমাদের অনেক উচ্চ (জনসমর্থন) থাকা উচিত,” বলেন ট্রাম্প।
“তাই এই বিষয়টি কৌতূহলজনক, একজন ব্যক্তি আমাদের জন্য কাজ করলেন আর এখন সবাই তাদের নিয়ে ভাবে আর আমাকে কেউ পছন্দ করে না। এটি কেবল আমার ব্যক্তিত্বের জন্য হতে পারে,” বলেন তিনি।
সম্প্রতি করোনাভাইরাস মহামারীতে যুক্তরাষ্ট্রে ফের সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এতে সংকটের সর্বোচ্চ পর্যায় দেশটি পার করে এসেছে এমন আশা মিইয়ে গেছে। করোনাভাইরাস সংকটের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে এবং লাখ লাখ লোক বেকার হয়ে পড়েছেন।
মঙ্গলবার দেশটির দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় চারটি রাজ্য রেকর্ড সংখ্যক দৈনিক মৃত্যুর কথা জানিয়েছে। মহামারীতে পুরো যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় দেড় লাখে দাঁড়িয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কোনো বিষয়ে সহমত ও কোন বিষয়ে তার দ্বিমত আছে, তা খোলাখুলি বলে আসছেন ড. ফাউচি। এ কারণে হোয়াইট হাউসের ভিতরে তাকে নিয়ে বিতর্ক আছে।