লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি কাজী মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে তার স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম ও শ্যালিকা জেসমিন প্রধানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল বুধবার দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দীন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।সকাল সাড়ে ১০টায় সেলিনা ইসলাম ও তার বোন জেসমিন প্রধান দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হন। এরপর দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এমপি সেলিনা ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন।
সেলিনা বলেন, ‘দুদক আসতে বলেছিল। আমরা আমাদের বক্তব্য দিয়েছি। গণমাধ্যমে যেগুলো আসছে, সেগুলোর কোনো সত্যতা নেই। আমরা দুদকে লিখিত বক্তব্য দিয়েছি। আমাদের কোনো গোপন সম্পদ নেই। যা আছে তার বিবরণ দুদককে দিয়েছি। আমরা আইনের পক্ষে। দুদককে সব ধরনের সহযোগিতা করব।’
তিনি বলেন, ‘কুয়েতে পাপুলের প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করেন। সেই প্রতিষ্ঠানে কাজ করে দেশের বহু শ্রমিক কোটি কোটি টাকার রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। সেখানে একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রের কারণে কুয়েতে তিনি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। মূলত পাপুল ষড়যন্ত্রের শিকার। আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এসব করা হচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, তার স্বামী শহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ।
এর আগে গত ১২ জুলাই তলবি নোটিশের মাধ্যমে সেলিনা ইসলাম ও জেসমিন প্রধানকে দুদকে হাজির হতে বলেছিলেন অভিযোগ অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন। দুদকের পাঠানো নোটিশে বলা হয়, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক ?কাজী মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম পাপুলসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে গ্রাহককে লোন বরাদ্দ করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ মানি লন্ডারিং করে বিদেশে পাচার এবং শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা প্রয়োজন।
অনুসন্ধানের ধারাবাহিকতায় ১৭ জুন দুদক পাপুলের স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জানিয়ে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করে পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) চিঠি দেয়। এরপর গত ২২ জুন পাপুল, স্ত্রী সেলিনা, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও শ্যালিকা জেসমিনের ব্যক্তিগত ও ব্যাবসায়িক দেশি-বিদেশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে থাকা সব ব্যাংক হিসাব স্থগিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেয় দুদক।
পাপুলকে ৬ জুন কুয়েতে গ্রেফতার করে সেই দেশের পুলিশ। তার বিরুদ্ধে মানব পাচার, অর্থ পাচার ও ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। বর্তমানে তিনি কুয়েতে কারাবন্দি রয়েছেন।