ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি তার নিজের বর্তমান অবস্থাকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো বলে উল্লেখ করেছেন।
বৃহস্পতিবার ৪৩তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় লিটারেচার ফেস্টিভ্যাল উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
‘ভারতরত্ন’ সম্মান প্রাপ্তির জন্য অনুষ্ঠানে তাকে সংবর্ধনা জানায় পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড কর্তৃপক্ষ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রণব মুখার্জি বলেন, কিছুদিন আগে ৮৪ বছর কমপ্লিট করেছি। এখনও সুস্থ আছি। প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পরে হিসেব করে দেখেছি গত দেড় বছরে প্রায় দু’ লক্ষ তেষট্টি হাজার কিলোমিটার ঘুরেছি ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায়। ভারতবর্ষের বাইরে একটি দেশেই গিয়েছি– সেটা বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম গিয়েছিলাম। কবি শঙ্খ ঘোষ এবার বাংলাদেশ বইমেলা উদ্বোধন করেছেন। সেদিন একটা লেখায় পড়ছিলাম, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা। তার সঙ্গে আমার দুঃখের মিল রয়েছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেছেন– ‘এখন আর পারি না। সময় পাই না। নানা বাঁধা। কিন্তু মনটা চলে যায় ছোটবেলার দিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলোর দিকে। যখন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বইমেলায় ঘুরতাম। পাতা উল্টে দেখতাম। সারাটা দিন বইমেলায় ঘুরতাম।’
এভাবেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত প্রিয়জন প্রণব মুখার্জি তার আবেগ ছড়িয়ে দেন কলকাতার বইমেলায়। তিনি বলেন, ‘সরকারি কাজে আটকে না গেলে আমার মনে পড়ে না, এমন কোনও বইমেলা হয়নি যে আমি আসিনি। শুধুমাত্র কোনও অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নয়, বইমেলার আনন্দে অংশ নিতেই আমি বইমেলায় আসতাম।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রণব মুখোপাধ্যায় শুধু আজ নয়, গত চল্লিশ বছর ধরে কলকাতা বইমেলার আপনজন। সত্তর দশকের শেষ থেকে যখনই একটু সময় পেয়েছেন, চলে এসেছেন বইমেলায়। ঘুরেছেন বিভিন্ন স্টলে। সেইসব ছবি আমাদের আছে সম্পদ হয়ে আছে। রাষ্ট্রপতি হওয়ার কিছুদিন আগেও তিনি বইমেলায় এসেছিলেন, গিল্ড প্রবর্তিত পুরস্কার প্রদান করতে। সেবার পুরস্কার পেয়েছিলেন নবনীতা দেবসেন। যখনই কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা বিপন্ন হয়েছে তখনই পাশে থেকেছেন প্রণবদা, কারণ তিনি বইবন্ধু।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষ, সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার এবং দশটি দেশের দশজন অতিথি-সাহিত্যিক।