খালেদা জিয়ার প্যারোল নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জনের মধ্যেও তা জামিনে মুক্তির আশা ছাড়ছেন না বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ।
তিনি বলেছেন, “আমি স্পষ্ট বলতে চাই, আমরা ছেড়ে দেব না। আমরা আশা হারাব না। জামিন হচ্ছে না, কিন্তু জামিন হবে। আজকে না হোক, কালকে হবে এবং বেগম জিয়া অবশ্যই আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।”
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডের গত বছরের শুরুতে কারাগারে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা। এরপর আরেকটি মামলায় তার দণ্ডের রায় হয়। আরও মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
বিএনপি তাদের নেত্রীর জামিনে মুক্তি আশা করলেও তাদের আশা মেটেনি। এজন্য সরকারকেই দায়ী করছেন দলটির নেতারা।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের এক আলোচনা সভায় বক্তব্যেও মওদুদও একই কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আজকে প্রায় ১৬ মাস হতে চললো, আমরা এখনও বেগম জিয়াকে আইনি প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে মুক্ত করতে পারিনি। তার মূল ও প্রধান কারণ হলো রাজনৈতিক। রাজনৈতিক কারণেই তার মুক্তি হয় নাই, তিনি জামিন পান না এবং তাকে কারাবন্দি থাকতে হচ্ছে।”
বিএনপির সংসদ সদস্যদের শপথ নেওয়ার পেছনে তার প্যারোলে মুক্তির পথ তৈরি করার বিষয়টি রয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা রয়েছে।
তবে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদার আপিল হাই কোর্টে শুনানিতে আসায় তা জামিনে আশাবাদী করে তুলেছে তার অন্যতম আইনজীবী মওদুদ।
তবে আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হলে আন্দোলনের পথে যেতে হবেও নেতা-কর্মীদের প্রস্তুতি নিতে বলেন তিনি।
মওদুদ বলেন, “আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিএনপি যাতে দুর্বল না হয়, সেদিকে আমাদের নজর রাখতে হবে।
‘আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সেটা বাস্তবায়ন করতে হবে।”
খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না অভিযোগ করে সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ বলেন, “আজকে ১০ বছর আইনের প্রয়োগ আছে ঠিকই, তবে আমরা যারা বিরোধী দল করি, আমাদের জন্য সেই প্রয়োগ একরকম, আর সরকারপন্থি তাদের জন্য অন্যভাবে করা হয়। এটা দুর্ভাগ্যজনক।”
বিএনপি নেতা বলেন, “বেগম জিয়াকে আমি যতদূর চিনি, তিনি এখনও অত্যন্ত কঠোর মনোভাব নিয়ে আছেন। তিনি শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ, মানসিকভাবে অত্যন্ত সবল এবং তিনি কোনো ধরনের আপসে বিশ্বাস করেন বলে আমি মনে করি না।
খালেদা জিয়ার মুক্তি, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়ার আশু আরোগ্য এবং প্রয়াত ব্যারিস্টার আমিনুল হক ও অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান খানের স্মরণে এই আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল হয়।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে ও মোহাম্মদ আলীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন খোকন, আইনজীবীদের মধ্যে সাখাওয়াত হোসেন খান, খোরশেদ মিয়া আলম, শফিউদ্দিন ভুঁইয়া, নাসরিন আখতার, সাইফুর রহমান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।