অসমীয়া বিজ্ঞানী ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্রযান অভিযানের উপদেষ্টা ড. জিতেন্দ্র নাথ গোস্বামীর নাম আসামের নাগরিকপঞ্জিতে জায়গা পায়নি।
৩১ অগাস্ট প্রকাশিত ওই জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনের (এনআরসি) চূড়ান্ত তালিকায় আসামের জোরহাটের অধিবাসী এই বিজ্ঞানীর পরিবারের সদস্যরাও ঠাঁই পাননি বলে স্থানীয় অনলাইন পোর্টাল নর্থইস্ট নাও জানিয়েছে।
ড. জিতেন্দ্র বলেন, “আমরা ২০ বছর ধরে আহমেদাবাদে আছি। এনআরসিতে আমাদের নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য যা করণীয় ছিল তা হয়তো আমরা করতে পারি নাই। তবে আমাদের পরিবার আসামে আছে, জোরহাটে আমাদের জমিও আছে “
তার ভাই হিতেন্দ্র নাথ গোস্বামী আসামের বিধানসভার স্পিকার।
এই বিজ্ঞানী বলেন, “ভবিষ্যতে যদি কোনো সমস্যা হয়, তাহলে জমির কাগজপত্র দেখিয়ে একটা কিছু করতে হবে আমাদের। এবিষয়ে আমি ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী করণীয় বিষয়ে তার পরামর্শ চাইব।”
প্রায় চার বছর ধরে যাচাই-বাছাইয়ের পর আসাম সরকার শনিবার সকালে ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স-এনআরসির (নাগরিকপঞ্জি) চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে।
তালিকায় ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জন জায়গা পেয়েছেন। বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন, যাদের মধ্যে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলি আহমেদের পরিবারের সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বরাও রয়েছেন।
ড. জিতেন্দ্র ভারতের মঙ্গলযান কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত রয়েছেন। ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের আয়োজনে সফলভাবে উৎক্ষেপিত চন্দ্রযান-২ অভিযানের অন্যতম উপদেষ্টাও তিনি।
ভারতীয় সময় শনিবার দেড়টা থেকে আড়াইটার মধ্যে চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদে অবতরণ করার কথা। ভোর সাড়ে ৫টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে ল্যান্ডার থেকে বের হয়ে রোভার প্রজ্ঞায়ন চাঁদ ঘুরে দেখবে।
দ্বিতীয় চন্দ্রযানের ৯৭৮ কোটি রুপির অভিযান
ইন্ডিয়াটুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের গুজরাটে স্থাপিত বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য স্ট্যাচু অব ইউনিটির নির্মাণ খরচের তিন ভাগের এক ভাগও ব্যয় হয়নি চাঁদের বুকে নামার এ অভিযানে।
এমনকি মহারাষ্ট্রে মারাঠা বীর শিবাজী স্মরণে নির্মিত ভাস্কর্যে ব্যয় হয়েছে এর চারগুণ; ৩ হাজার ৬৩৬ কোটি রুপি।
আর ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের স্মরণে ব্রোঞ্জের প্রলেপে মোড়ানো ৫৯৭ ফুট দীর্ঘ স্ট্যাচু অব ইউনিটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২ হাজর ৯৬৬ কোটি রুপি।
সারা জাগানো হলিউড সিনেমা অ্যাভেঞ্জারস: এন্ড গেইম বানাতেও গুণতে হয়েছিল ২৪৪৩ কোট রুপি। চন্দ্রযান-২ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৯৭৮ কোটি রুপি।
এর মধ্যে ৬০৮ কোটি ব্যয় হয়েছে স্পেস সিসটেম তৈরিতে; বাকি ৩৭৫ কোটি ব্যয় করা হয় রকেট লঞ্চার জিএসএলভি এমকে-৩ তৈরিতে।
চাঁদে অবতরণের এই মিশন সফল হলে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের পর তালিকায় চতুর্থ দেশ হিসেবে নাম লেখাবে ভারত।