আ. লীগ দেশটাকে গোরস্তানে পরিণত করেছিল: জামায়াত আমির

1734792221.safiq

আওয়ামী লীগ দেশটাকে গোরস্তানে পরিণত করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা শাখার আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বুকের ভেতর তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’। তাদের ক্ষোভটা ছিল সাড়ে ১৫ বছর। এ সময়টায় তারা জাতির ঘাড়ে বসে সব অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। দেশটাকে শ্মশান কিংবা গোরস্তানে পরিণত করেছিল। এরা মাঝে মাঝে বলতো দেশে নাকি অনাবিল শান্তি বিরাজ করছে।

জামায়াতের আমির বলেন, আমরা বলতাম, শান্তি তোমরা কায়েম করেছো কবরের মতো। যেখান থেকে হাসি কিংবা কান্নার শব্দ শোনা যায় না। কবরস্থানে কোনো মানুষ থাকে না। হাসি কান্নার আওয়াজ শোনা যায় না। ২৮ অক্টোবর তারা লাশের ওপর নর্দন করেছে। তখনই তারা জানান দিয়েছিল যে ক্ষমতায় এসে খুন-গুমের রাজ্য কায়েম করবে। আমরা সেদিন আমাদের বুকের কান্না বাংলাদেশের মানুষের কাছে হয়তো বা পৌঁছাতে পারিনি। এরপর পেছনে বোঝাপড়া করে, ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করে, একটি জঘন্য সরকারের হাত ধরে করে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তারা জয়লাভ করেছিল। ২০০৯ সালের ১০ জানুয়ারি ক্ষমতায় বসে খুনের নেশা বাস্তবায়নের কর্মসূচি হাতে নেয় আওয়ামী লীগ।

মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা জামায়াতের আমির ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহেদ আলীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মো. ইয়ামির আলী, সহকারী সেক্রেটারি হারুনুর রশিদ যৌথভাবে এ সম্মেলন পরিচালনা করেন।

ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, আওয়ামী লীগ দেশটাকে গোরস্তানে পরিণত করেছিল। তাদেরকে বিদায় করতে সাড়ে ১৫ বছর আমরা দফায় দফায় অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। কিন্তু সেই আন্দোলনের পরিসমাপ্তি ঘটাতে পারিনি। স্বৈরাচারকে আমরা তাড়াতে পারিনি, বিদায় করতে পারিনি। আমি গর্বিত, আমাদের সন্তানেরা সে কাজটি করেছে। আমি আমাদের সন্তানদেরকে ভালোবাসা উপহার দিচ্ছি। শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। জাতির পক্ষ থেকে তাদেরকে স্যালুট জানাচ্ছি। আল্লাহতায়ালার সাহায্যে তারা অসাধ্য সাধন করেছে। এরকম সন্তান পেয়ে জাতি গর্বিত। ইনশাআল্লাহ আগামীর বাংলাদেশ আমরা তাদের হাতেই তুলে দেবো।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ মৌলভীবাজারে সবচেয়ে বেশি চা বাগান। রাষ্ট্রীয় যথাযথ পর্যবেক্ষণ না থাকায় চা শিল্প ধ্বংস হওয়ার পথে। মালিক পক্ষ চায়ের যথাযথ মূল্য পান না। শ্রমিকরাও পারিশ্রমিক পান না। তিনি নেতাকর্মীদের চারটি বিষয় তুলে ধরেন। এর মধ্যে নিয়ত সহি করে জ্ঞানের রাজ্যে এগিয়ে গিয়ে সাহসী হয়ে কঠোর পরিশ্রম করার আহ্বান জানান। সব শেষ তিনি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

সমাবেশ শেষে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান মৌলভীবাজার জেলার বিশিষ্টজন, সুধী ও পেশাজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, হবিগঞ্জ জেলা আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য কাজী মাওলানা মুখলিছুর রহমান, মৌলভীবাজার জেলার সাবেক আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিশে সুরার সদস্য দেওয়ান সিরাজুল ইসলাম মতলিব ও মো. আবদুল মান্নান, মৌলভীবাজার বিএনপি জেলা শাখার আহ্বায়ক ফয়জুল কবির ময়ুন, হেফাজতে ইসলামীর জেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক মাওলানা আবদুস সবুর, মৌলভীবাজার জেলার নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর সভাপতি শরিফ মাহমুদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও পল্টন থানা আমির শাহীন আহমদ খান, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আমিনুল ইসলাম, ছাত্রশিবিরের মৌলভীবাজার শহর শাখার সভাপতি তারেক আজিজ, ছাত্রশিবিরের মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি হাফেজ আলম হোসাইন, বড়লেখা উপজেলার সাবেক আমির মো. কমর উদ্দিন, মৌলভীবাজার পৌর শাখার আমির ও জেলা কর্মপরিষদ সদস্য হাফেজ মাওলানা তাজুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ও মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলা আমির মো. ফখরুল ইসলাম, বড়লেখা উপজেলার আমির মো. এমদাদুল ইসলাম, রাজনগর উপজেলার আমির আবুর রাইয়ান শাহীন, কুলাউড়া উপজেলার আমির অধ্যাপক আব্দুল মুনতাজিম, জুড়ী উপজেলার আমির আব্দুল হাই হেলাল, শ্রীমঙ্গল উপজেলার আমির মাও. ইসমাঈল হোসেন ও কমলগঞ্জ উপজেলা আমির মো. মাসুক মিয়া।

Pin It