গোলযোগ-সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও চলমান ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ‘অংশগ্রহণমূলক ও সফল’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশান কে এম নূরুল হুদা।
সেই সঙ্গে আগামী নির্বাচনগুলোতে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কমিশনের ‘আরও শক্ত অবস্থান’ থাকবে বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বুধবার সকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিশেষ সভায় সূচনা বক্তব্যে কথা বলছিলেন সিইসি হুদা।
তিনি বলেন, “সামগ্রিক অর্থে নির্বাচন সফল হয়েছে। অল্প বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে; দুর্ঘটনা ঘটেছে, হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। যেগুলো কিছুতেই কাম্য নয়। তবুও নির্বাচনের মানদণ্ড যদি ভোট প্রদান হয়, তাহলে আমি বলব, দুই ধাপের নির্বাচনে গড়ে ৭৪ শতাংশ ভোট পড়েছে।”
মহামারী পরিস্থিতির উন্নতির প্রেক্ষাপটে ২১ জুন, ২০ সেপ্টেম্বর ও ১১ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনের ভোট হয়েছে। আগামী ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপের ও ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপের ভোট রয়েছে। ২৭ নভেম্বর পঞ্চম ধাপের ইউপি ভোটের তফসিল নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
ইতোমধ্যে ইউপি ভোটে সহিংসতা নিয়ে সবমহলে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ভোটের আগে-পরে ও ভোটের দিন মিলিয়ে তিন ডজনের বেশি লোকের প্রাণহানির তথ্য গণমাধ্যমে এসেছে।
নির্বাচন কমিশনও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজনৈতিক দলগুলোকে সংঘাত এড়াতে আন্তরিক হতে বলছে। ২০টির বেশি দল অংশ নিয়েছে এবারের ইউপি নির্বাচনের প্রথম দুই ধাপে।
সিইসি বলেন, “আমরা দাবি করি, প্রতিযোগিতামূলক ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। … পরবর্তী নির্বাচনগেুলোকে সামনে রেখে আজকের সভায় পর্যালোচনা করব এবং ভবিষ্যতে আরও সঠিক ও শক্তভাবে কীভাবে করা যায় তা নিয়েও আলোচনা করা হবে।”
মার্চে তফসিল ঘোষণা করলেও করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বিলম্বে ভোট করতে হয়েছে কমিশনকে। ২১ জুন থেকে ভোট শুরু হয়।
এ প্রসঙ্গ টেনে সিইসি বলেন, “করোনার কারণে নির্বাচন নিয়ে কষ্টের মধ্যে আছি।… তারিখগুলো শিফট করতে হয়। সরকারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে পরামর্শ করে নতুন সময় নির্ধারণ করেছে ইসি সচিবালয়।”
মাঠপর্যায়ে যারা নির্বাচনী দায়িত্বপালন করেছেন, তারা ‘যথাসাধ্য চেষ্টা’ করেছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, “যেখানে নির্বাচনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল না, নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত ছিল, সেসব জায়গার নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
“আমরা দেখেছি যে কোথাও কোথাও মারামারি হয়েছে, খুন জখম হয়েছে। তারপরেও স্থানীয় প্রশাসন পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখে নির্বাচন চালু রেখেছে এবং সেই নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট সম্পন্ন হয়েছে। ”
চার নির্বাচন কমিশনার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, ইসি সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ মহা পরিদর্শক, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, আনসার ও ভিডিপি, ডিজিএফআই, এনএসআই-এর প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।