বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিকল্পনা (স্কিম) ছাড়া পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডকে টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে বলে মনে করছেন খন্দকার ইব্রাহীম খালেদ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই ডেপুটি গভর্নর হাই কোর্টের নির্দেশে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
আদালতের ডাকে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে উপস্থিত হয়ে কোম্পানির সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে নিজের এই মতামত উপস্থাপন করেন ইব্রাহীম খালেদ।
তবে বাংলাদেশের ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. শাহ আলম আদালতকে বলেছেন, বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বিলোপ, অপসারণ, নতুন নিয়োগ বা পুনর্গঠন করা হলে হয়ত ওই কোম্পানি টিকিয়ে রাখা সম্ভব।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে তিন বিচারকের আপিল বেঞ্চে মঙ্গলবার তাদের বক্তব্য শোনেন। শুনানি শেষে আদালত বিষয়টি বুধবার আদেশের জন্য রাখে।
ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের এমডি পদ থেকে পি কে হালদারকে অপসারণ করে ইব্রহীম খালেদকে স্বাধীন পরিচালক ও চেয়ারম্যান নিয়োগ এবং ২০ কর্মকর্তার পাসপোর্ট জব্দ করতে হাই কোর্টের আদেশ বহাল থাকবে কি না, বুধবারই সে সিদ্ধান্ত দেবে আপিল বিভাগ।
এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তানজিব-উল আলম। আর ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আহসানুল করিম।
ইব্রহীম খালেদ আদালতে বলেন, ২০১৫ সাল পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটড ভালোভাবেই চলছিল। ২০১৬ সাল থেকে অবস্থা খারাপ হতে থাকে। এর পেছনে মূল ব্যক্তি ছিলেন কোম্পানির এমডি প্রশান্ত কুমার হালদার।
“তার সঙ্গে আরও অনেকেই রয়েছে। এরা একসঙ্গে অনেক শেয়ার কিনে কোম্পানির আগের নেতৃত্বকে বের করে দিয়েছেন। বের করে দেওয়া মানে… কাউকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, কাউকে বাধ্যতামূলক অবসরে, অথবা ছাঁটাই করা হয়েছে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সাবেক কর্মকর্তা বলেন, “পিকে হালদারসহ কিছু ব্যক্তি ওই কোম্পানি থেকে ১ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে তা লেখা আছে। খতিয়ে দেখতে অনুমতি দেওয়া হয়নি। সর্বশেষ কোন ব্যক্তি পর্যন্ত এই টাকা পৌঁছালো তা জানি না। এই টাকা ফেরত আসার সম্ভাবনা নেই। টাকা কোথায় আছে সেটা আনট্রেসেবল। দেশেও থাকতে পারে, দেশের বাইরেও যেতে পারে। তবে এই টাকা উদ্ধার করতে রিকভারি এজেন্ট নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। এ ধরনের এজেন্ট দিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার আছে।”
পিপলস লিজিংয়ের অবসায়ন করা হয়েছে, এখন যদি একইভাবে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটডের অবসায়ন করা হয় তাহলে আর্থিক খাতে ধস নামতে পারে বলে সতর্ক করেন ইব্রাহীম খালেদ। আবার বর্তমান অবস্থায় এ কোম্পানিকে দাঁড় করানো যাবে কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন।
“আমি সন্দিহান। আমি সাহস পাচ্ছি না। আমি তো এই কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার নই। হাই কোর্টের আদেশে আমাকে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান করা হয়েছে। বাইরে থেকে এসে আমি এটাকে কতটা দাঁড় করাতে পারব! সর্ষের মধ্যে ভূত থাকলে আমি কী করতে পারি!”
প্রধান বিচারপতি কোম্পানির আমানতকারীদের অবস্থা জানতে চাইলে ইব্রাহীম খালেদ বলেন, টাকা নেই, ফলে গ্রাহকরা চাইলেও টাকা ফেরত দেওয়া যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. শাহ আলম আদালতকে বলেন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের মূলধনে ৪৫০ কোটি ১৯ লাখ টাকা ঘাটতি রয়েছে। ব্যাংক ঋণ আছে ৯৫৭ কোটি ১৪ লাখ টাকার। সর্বমোট ঋণ ৩ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা প্রধান বিচারপতি জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, “আমারা বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা দিয়েছি। কখনও কখনও বাস্তবায়ন করেছে, কখনও কখনও করেনি।
শাহ আলম বলেন, ‘বিধি বহির্ভূতভাবে’ টাকা নিয়ে যাওয়ায় মূলধনের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইনানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে। এরই মধ্যে একটি প্রতিবেদন জমাও দিয়েছে।
“মোট ৪৮টি ঋণ হিসাবের সঙ্গে ১২টি প্রতিষ্ঠান ও কতিপয় ব্যক্তির বিপরীতে মোট ১৫৯৬ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। ঋণ বিতরণে পরিচালক পর্ষদের ডিউ ডিজিলেন্সে ঘাটতি ছিল। এই ৪৮টি ঋণ হিসাবের লেনদেন ভাউচার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সুবিধাভোগী কারা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, “আমরা দেখলাম একজনই সাড়ে ৩ হাজার কোটি কাটা নিয়েছে। আপনাদের হিসাব কি শুভঙ্করের ফাঁকি?”
শাহ আলম তখন বলেন, “পিকে হালদারসহ অন্যরা এ কোম্পানি থেকেই সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা নিয়েছেন বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণে আমরা পাইনি।”
বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে, আদালত জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, “আমরা তাদের ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছি, শোকজ করেছি এবং দুর্নীতি দমন কমিশনকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”
নতুন নিযুক্ত স্বাধীন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংকে পুনর্গঠন করা সম্ভব বলেও আদালতে মত দেন শাহ আলম।
এরপর ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেড নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদন তুলে ধরেন আইনজীবী তানজীব-উল আলম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যারা শেয়ার নিয়ে কোম্পানি দখল করেছে, তারা ডাকাতির জন্যই এসেছিল। বিআর ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, নেচার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, নিউটেক এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড ও হাল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড একই সময়ে (২০১৫ সালের ১১ মার্চ) একই পরিমাণ মূলধন (২০ লাখ টাকা) নিয়ে ৩১ দশমিক ৫৪ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয়।
পরবর্তীতে পরিচালনা পর্ষদে এই চার কোম্পানি থেকে পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। পরের তিন বছরে আগ্রাসী ঋণ বিতরণ করে কোম্পানি। এক কোটি টাকার বেশি ১৩৩টি ঋণের নামে ২ হাজার ১০৮ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়।
বিতরণকৃত ঋণের অর্থ ৭৮১টি চেকের মাধ্যমে দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ৪১টি ব্যাংক ও কিছু ব্রোকারেজ হাউজে স্থানান্তর করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের চেক ব্যবহার করে ঋণের সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এমন ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানের হিসাবে অর্থ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যাতে প্রকৃত সুবিধোভোগীদের আড়াল করা যায়।
এই অনিয়মের জন্য কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ, প্রধান নির্বাহী, নির্বাহী কমিটি, নিরীক্ষা কমিটি,ঋণ-ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভাগ, আভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা পরিপালন বিভাগ সম্মিলিতভাবে দায়ী।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানিতে বলেন, “কিছু লোক কিছু লেখাপড়া শেখে জনগণের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য। এরা হোয়াইট কলার ক্রিমিনাল। এদের কাজই হচ্ছে জনগণের টাকা হাতিয়ে নেওয়া। পিকে হালদার কীভাবে চলে গেল সেটা আপনাদের (আদালতের) দেখা উচিৎ। কোম্পানি চলবে কি চলবে না, সে বিষয়ে আপনারা সিদ্ধান্ত নেন।”
তিনি বলেন, “আগে তো ব্যাংক ছিল না। মানুষ গোলায় ধান রাখত। এটাই ছিল গ্রামীণ অর্থনীতির বৈশিষ্ট। কিন্তু মানুষ এখন ব্যাংকে টাকা রাখে। আর অনেকেই ব্যাংক করেন জনগণের টাকা লুটের জন্য।“
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, “পিকে হালদার কীভাবে পালালো সেটা আপনাদের দেখা উচিৎ। কোর্ট কি চোখ বন্ধ করে থাকবে? দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে হাই কোর্ট আদেশ দিয়েছে। কোর্টের আদেশ যদি স্থগিত করা হয় তাহলে যারা কোম্পানিকে ডুবিয়েছে তারাই লাভবান হবে। হাই কোর্ট যে আদেশ দিয়েছে এর চেয়ে ভালো আদেশ হতে পারে না।”
হাই কোর্টর আদেশ স্থগিত চেয়ে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের আবেদনকারী দুই কর্মকর্তার আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, “এখানে (শুনানিতে) কোম্পানি অবসায়নের কথা এসেছে। কোম্পানি যদি ভেঙে যায় তাহলে কিছু থাকবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকও বলেছে কোম্পানি পুনর্গঠনের কথা। অবসায়ন হয়ে গেলে আর ব্যবসা থাকবে না। অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকও চাইছে যে কোনোভাবে কোম্পানিটকে বাঁচাতে হবে “
মক্কেলদের বিষয়ে এ আইনজীবী আদালতকে বলেন, “তারা ভালো মানুষ। বাংলাদেশ ব্যাংকও বলেছে কিছু ভালো পরিচালক আছেন। ভালো মানুষ স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারলে টিকতে পারবে না। পিকে হালদারকে যে শাস্তি দিতে চান, দিন। আমাদের আপত্তি নাই। পিকে হালদারসহ জড়িতদের আমিও শাস্তি চাই। কিন্তু এদের জন্য যদি আমাদের মরতে হয় তাহলে ব্যাংকিং খাত ধ্বংস হয়ে যাবে। আমার মক্কেলদের পাসপোর্ট জব্দ করে রাখা হয়েছে, তাদের বিদেশ যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের তো ব্যবসা আছে। তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে আছে।”
গত ২১ জানুয়ারি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে অপসারিত প্রশান্ত কুমার হালদারসহ কোম্পানির শীর্ষ ২০ কর্মকর্তার পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
স্বরাষ্ট্র সচিবকে ওই নির্দেশ দিয়ে আদালত আদেশে বলে, “অগ্রধিকার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো, যাতে এসব ব্যক্তি কোনোভাবেই দেশ ছাড়তে না পারেন।”
এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করে ১৫ দিনের মধ্যে আদালতকে জানাতে বলা হয় হাই কোর্টের ওই আদেশে। সেই সঙ্গে বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই ২০ জনের নগদ অর্থ, গাড়ি, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর না করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।
পি কে হালদার বাদে বাকিরা হলেন- কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. নুরুল আলম, পরিচালক জহিরুল আলম, এমএ হাশেম, নাসিম আনোয়ার, বাসুদেব ব্যানার্জী, পাপিয়া ব্যানার্জী, মোমতাজ বেগম, নওশেরুল ইসলাম, আনোয়ারুল কবির, প্রকৌশলী নরুজ্জামান, আবুল হাশেম, মো. রাশেদুল হক, পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদার, স্ত্রী সুস্মিতা সাহা, ভাই প্রিতুষ কুমার হালদার, চাচাতো ভাই অমিতাভ অধিকারী, অভিজিৎ অধিকারী, ব্যাংক এশিয়ার সাবেক পরিচালক ইরফান উদ্দিন আহমেদ, পি কে হালদারের বন্ধু উজ্জ্বল কুমার নন্দী।
ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাত বিনিয়োগকারীর টাকা ফেরত চেয়ে করা মামলার শুনানি শেষে এ আদেশ এসেছিল হাই কোর্ট থেকে।
ওইদিন আদেশে আদালত ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে পি কে হালদারকে অপসারণ করে কোম্পানি পরিচালনার জন্য স্বাধীন পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ইব্রাহিম খালেদকে নিয়োগ দেয়।
সে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে আইএলএফএসএল।ওই আবেদনের শুনানিতেই খন্দকার ইব্রাহীম খালেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন নির্বাহী কর্মকর্তাকে আসতে বলেছিল সর্বোচ্চ আদালত।
দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী গত ৮ জানুয়ারি এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
তাতে বলা হয়, প্রশান্ত কুমার অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসংগতিপূর্ণ ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
লিপরো ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ও পিঅ্যান্ডএল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ছাড়াও বিভিন্ন ‘কাগুজে কোম্পানিতে’ প্রশান্ত কুমার হালদারের ১২৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকার সম্পত্তি রয়েছে, যা তিনি ‘অবৈধভাবে’ অর্জন করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয় মামলায়।
এজাহারে বলা হয়, প্রশান্ত ময়মনসিংহের ভালুকায় ৫৮৯ শতক জমি কিনেছেন, কিন্তু এর কোনো আয়ের উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। তিনি ছলছাতুরির আশ্রয় নিয়ে বেনামে (অন্যদের নামে) ৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা রেপটাইলস ফার্মের নামে বিনিয়োগ করেছেন।
এছাড়া প্রশান্ত নর্দান জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিতে বেনামে ৩৩ লাখ টাকা, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে বেনামে ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, আজিজ ফেবরিক্স লিমিটেডে বেনামে ৬৩ লাখ টাকা, আনান কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজে বেনামে চার কোটি ৯০ লাখ টাকা, একইভাবে ক্লীউইস্টন ফুড অ্যান্ড একোমোডেশনে ৩১ কোটি ৪৫ লাখ ২৬ হাজার ৪০০ টাকা, রহমান কেমিকেলে ৭০ লাখ টাকা ‘বেনামে’ বিনিয়োগ করেছেন বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।