করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরনটিকে ‘ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট’ বলায় আপত্তি জানিয়েছে ভারত সরকার।
যে যে লেখায় বা পোস্টে ‘ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট’ কথাটি থাকবে, সেগুলো বাদ দিতে নয়া দিল্লির পক্ষ থেকে সোশাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষগুলোকে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি ও রয়টার্স।
ভারতের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে শুক্রবার এই চিঠি পাঠানো হয়েছে, যা দেখার কথা জানিয়েছে রয়টার্স।
বিবিসি লিখেছে, যতগুলো কনটেন্টে ‘ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট’ কথাটি রয়েছে, তার সবগুলো অতিসত্বর তুলে নিতে বলা হয়েছে সোশাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষগুলোকে।
প্রায় দেড় বছর আগে মানুষে সংক্রমিত হওয়া নতুন করোনাভাইরাস রূপ বদল করে চলছে।
এর মধ্যে গত বছর ভারতে এর যে পরিবর্তিত রূপ শনাক্ত হয়েছে, তার আনুষ্ঠানিক নাম বি.১.৬১৭ হলেও এটি ‘ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট’ নামেই পরিচিতি পেয়েছে।
গণমাধ্যম থেকে শুরু করে সোশাল মিডিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও তাই বলে আসছিলেন। এর আগে যুক্তরাজ্যের, ব্রাজিলের ও দক্ষিণ আফ্রিকার ধরনগুলোও ‘ইউকে ভ্যারিয়েন্ট’ ‘ব্রাজিল ভ্যারিয়েন্ট’ ও ‘সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট’ নামে পরিচিতি পায়।
ভারতীয় ধরনটি প্রায় দুই ডজন দেশে পৌঁছেছে; এটার তিনটি ‘সাব টাইপ’র মধ্যে একটি বাংলাদেশেও শনাক্ত হয়েছে।
অতি সংক্রামক এই ধরনটিকে বিশ্বজুড়ে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা- ডব্লিউএইচও।
তবে ১১ মে ডব্লিউএইচওর বক্তব্য আসার পর ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সে দেশের গণমাধ্যমগুলোকে ‘ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট’ বলতে মানা করা হয়েছিল।
এখন সোশাল মিডিয়া থেকেও এই শব্দটি বাদ দেওয়ার দিকে এগিয়েছে ভারত সরকার।
চিঠিতে বলা হয়েছে, “এটা সম্পূর্ণ ভুয়া; কোভিড-১৯ এর বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত এমন কোনো ধরনই নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট বলে কিছু কখনও বলেনি। তারা বলেছে বি.১.৬১৭।”
এ বিষয়ে চেষ্টা করেও ভারতের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কোনো বক্তব্য না পাওয়ার কথা জানিয়েছে রয়টার্স।
নয়া দিল্লির উচ্চ পদস্থ এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, সোশাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষগুলোকে সোজাসাপ্টাভাবেই বলে দেওয়া হয়েছে। কেননা এতে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে, ভারতের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
একটি সোশাল মিডিয়ার নির্বাহী কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ভারত সরকার যা করতে বলেছে, তা করা খুব কঠিন। কারণ এমন কনটেন্ট কোটি কোটি হতে পারে।
করোনাভাইরাস মহামারী সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে ভারত, সেজন্য দেশটির সরকার সমালোচনায়ও পড়েছে।
শনাক্ত রোগীর দিক থেকে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই রয়েছে ভারত। দেশটিতে শনাক্ত রোগী ২ কোটি ৬২ লাখের বেশি; এর মধ্যে প্রায় ৩ লাখের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণ আড়াই লাখে এবং মৃত্যু ৪ হাজারে পৌঁছেছে।
মহামারী পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকারের সমালোচনামূলক কিছু পোস্ট সরিয়ে ফেলতে গত মাসে টুইটার ও ফেইসবুক কর্তৃপক্ষকে নরেন্দ্র মোদী সরকার বলেছিল বলে বিবিসি জানিয়েছে।