বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ইভিএম বাদ দিয়ে ব্যালটে ভোট নিতে প্রয়োজনে নির্বাচন পিছিয়ে দিন। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরে। এবার ইভিএম পদ্ধতিতে ঢাকা নগরবাসীর ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে। ইভিএম ব্যবহার বন্ধ রাখুন, ব্যালটে ভোট নেওয়ার ব্যবস্থা করুন। না হলে দেশের মানুষ ক্ষমা করবে না।
বুধবার গুলশানে হোটেল লেকশোরে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সের (অ্যাব) উদ্যোগে ‘প্রশ্নবিদ্ধ ইভিএমের কারিগরি অপব্যবহারের মাধ্যমে নির্বাচনী ফলাফল কারচুপির সম্ভাব্য সুযোগ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য ফয়সাল আলীমের নেতৃত্বে ড. এসএম আবদুর রাজ্জাক, আশরাফউদ্দিন বকুল, তানবিরুল হাসান, আসাদুজ্জামান ও মিজানুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত টিম। সেমিনারে তথ্যচিত্রের মাধ্যমে ইভিএমে ভোট কারচুপির নানা দিক তুলে ধরা হয়। এ সময় যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ার কূটনীতিকরাও উপস্থিত ছিলেন।
ইভিএমের বিরুদ্ধে জনমত তৈরির আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জোরালো কণ্ঠে সোচ্চার হতে হবে। মেশিন ব্যবহার করে মানুষ। তাই মেশিনের পেছনে কারা থাকবেন, সেটা জরুরি প্রশ্ন। এই মেশিনের পেছনে বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) আছে, আছে এই সরকার। তারা নির্বাচন ব্যবস্থা পরিচালনা করছে। যদিও তাদের ওপর মানুষের কোনো আস্থা নেই।
ঢাকা উত্তর সিটিতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের ওপর হামলা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলামের বক্তব্যকে ‘লজ্জাজনক’ আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যিনি এমন কথা বলতে পারেন, তার তো মেয়র হওয়ার যোগ্যতা থাকতে পারে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ইভিএম একটা মাত্র ঘটনা, একটা মাত্র মেশিন। এ রকম হাজারো মেশিন দিয়ে দেশের অর্থনীতি, সমাজ ও পুরো রাষ্ট্রকে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। ব্যাংক থেকে টাকা দেদার লুট হচ্ছে, শেয়ার মার্কেট মুখ থুবড়ে পড়েছে। গার্মেন্ট সেক্টর ক্রমান্বয়ে নিচের দিকে যাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, একই আইনে দুই ধরনের বিচার চলছে। খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় দুই বছর আটক রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, একই ধরনের মামলায় ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া- এ রকম অনেকে জামিন পেয়েছেন। অথচ খালেদা জিয়াকে জামিন দেওয়া হচ্ছে না।
অ্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সেলিম ভূঁইয়া বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে বিএনপির হাবিবুর রহমান হাবিব, অধ্যাপক মামুন আহমেদ, এবিএম মোশাররফ হোসেন, জহির উদ্দিন স্বপন, শাম্মী আখতার, আশরাফউদ্দিন বকুল, নেওয়াজ হালিমা আরলী, কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।