নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন শেষে উপকূলবর্তী নদীগুলোতে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ; এই ইলিশ উৎসবের ঢেউ লেগেছে ঢাকার বাজারেও।
শুক্রবার ছুটির দিনে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রচুর ইলিশ। আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৯০০ টাকায়। ক্রেতারাও আগ্রহ নিয়ে কিনছেন।
মিরপুরের বড়বাগ কাঁচাবাজারে ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি দরে। আর এক কেজি বা তার চেয়ে সামান্য বেশি ওজনের ইলিশের দাম ছিল ৮০০ টাকা।
প্রজনন মৌসুমে ইলিশ রক্ষার জন্য ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর ইলিশ শিকার, পরিবহন, মজুদ এবং বিক্রি ছিল নিষিদ্ধ।
নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগে ঢাকার বাজারে এক কেজি মাপের ইলিশ ১০০০-১২০০ টাকায় এবং তার চেয়ে ছোট ইলিশ ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল।
বড়বাগ কাঁচাবাজারের মাছ বিক্রেতা আহাদ আলী বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর বৃহস্পতিবার থেকেই ঢাকার বাজারে প্রচুর ইলিশ আসতে শুরু করেছে।
“হঠাৎ সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় মোকামের দাম কমে গেছে। গতকাল সর্বনিম্ন দর ছিল ৮০০ টাকা, আজ দাম আরও কমে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।”
এই বিক্রেতা বলেন, অনেকে আগেই ইলিশ ধরেছিলেন, কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে বিক্রি করতে পারেননি। সেই মাছও এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
বাজার করতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা সজীব বলেন, “ইলিশের দাম আগের চেয়ে কম দেখতে পাচ্ছি। অতি সম্প্রতি ইলিশের দাম এতটা কম কখনও দেখিনি।”
একটি ইলিশ কিনতে এসে শেষ পর্যন্ত এক হালি কিনে ফিরতে দেখা যায় পঞ্চাশোর্ধ শাহীন আহমেদকে।
তিনি বললেন, “দামে একটু সস্তা দেখে ১৫শ টাকায় এক জোড়া নিতে চাইলাম। বিক্রেতা পরে আরেক জোড়া ধরিয়ে দিল। ”
অর্থাৎ, তিন হাজার টাকায় এক কেজি মাপের চারটি ইলিশ কিনে বাড়ি ফিরেছেন শাহীন।
বাসাবো বাজারের বিক্রেতা তিতাস জানালেন, মাঝারি ইলিশ ৬০০-৭০০ টাকা এবং কেজি মাপের বা তার বড় ইলিশ ৬০০-৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ইলিশের দাপটে কাঁচাবাজারে অন্য মাছের দাম সামান্য কমেছে।
মিরপুরের বড়বাগ বাজারে মাঝারি আকারের রুই মাছ ২৮০ টাকা, গ্রাসকার্প ২৪০ টাকা এবং মৃগেল ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এক কেজি ওজনের আইর মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়, কোরাল মাছ ৫০০ টাকা এবং চিংড়ির কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ১৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহের বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১২৫ টাকায়। সোনালী জাতের মুরগি আগের মতই প্রতি কেজি ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ গত সপ্তাহের তুলনায় বাড়লেও দামের হেরফের হয়নি।
শ্যামলীর একটি কাঁচা বাজারে বড় আকারের প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, উচ্ছে ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা এবং পেঁপে বিক্রি ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছিল।
রান্নার অন্যতম অনুষঙ্গ পেঁয়াজের দাম তিন সপ্তাহ আগেই অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গিয়েছিল। শুক্রবার প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১৪০-১৫০ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ১৩৫-১৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।