ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দু’দিন আগে নির্বাচন কমিশনকে না জানিয়ে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের সভা আয়োজন উচিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, এই সভার কথা ইসি জানে না। আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল ইসিতে আসার পর তাদের কাছ থেকে ইসি জেনেছে, এটি নির্বাচনী সভা নয়, মুজিববর্ষের প্রস্তুতি সভা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
সিইসি বলেন, ‘এটা আমাদের কাছে আওয়ামী লীগ বলেনি, সেখানে (সভায়) নির্বাচন নিয়ে যদি কিছু না বলে তাতে নির্বাচনের কোড অব কনডাক্ট ভায়োলেট হবে কিনা, তা আলাদাভাবে বলা নেই। আমি মনে করি, নির্বাচন সামনে রেখে এই সভাটা তাদের না করাই উচিত ছিল। আর করার দরকার হলে আমাদের অনুমতি বা পরামর্শ নেওয়া উচিত ছিল। তারা সেটি নেননি, আমরা জানিই না।’
নির্বাচনের পর্যবেক্ষক নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বক্তব্যের বিষয়ে নূরুল হুদা বলেন, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য বিধিতে আছে তারা যেতে পারবেন, তাদের নিবন্ধন প্রয়োজন হবে না। স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা তো বাইরে থেকে আসেননি, তারা এখানকার। বিভিন্ন দূতাবাসে যারা আছেন তারা এখানকার। তারা তালিকা দিলে ইসি পরীক্ষা করে তাদের অনুমতি দিতে পারে। গাজীপুরসহ বিভিন্ন সিটি নির্বাচনেও তারা পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ অবশ্যই থাকবে। তারা যেন বিধির বাইরে কোনোরকম আচরণ করতে না পারেন, সে ব্যাপারে কমিশনের সতর্কতা থাকবে।
সিইসি আরও বলেন, যে কোনো সময়ের চেয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ আছে। প্রার্থীরা তাদের প্রচার চালাচ্ছেন। কোনো বাধা দেখি না। আমাদের কাছে ধরপাকড়ের তথ্য নেই। কোনো ক্রিমিনাল, সন্ত্রাস, বোমাবাজ যদি এখানে আসে, তাদের তো পুলিশ নজরদারিতে রাখবে এবং ধরবেই। কোনো বাসাবাড়িতে তল্লাশি করা হচ্ছে না। অন্যান্য জায়গায় যদি বাইরে থেকে এসে থাকে, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেছি, বিনা প্রয়োজনে কেউ যেন ঢাকায় না আসে। আবার বলেছি, ভোটকেন্দ্রের চারপাশে যেন অপ্রয়োজনীয় কোনো জটলা না থাকে। তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, ভোটকে কেন্দ্র করে ঢাকায় বহিরাগতদের প্রবেশের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।
‘নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের জন্য ইসি সহায়ক শক্তি’- বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে কে এম নূরুল হুদা বলেন, এ অভিযোগ মোটেই সত্য নয়। আমরা নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাদের যে দায়িত্ব, আইন মেনে সেই দায়িত্ব পালন করছি। আমরা কারও সহায়ক নয়, কারও পক্ষে বা বিপক্ষে নয়।