ইয়েমেনে উত্তেজনা বাড়ালে যুক্তরাষ্ট্রকে চরম মূল্য দিতে হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আরব দেশটির আনসারুল্লাহ প্রতিরোধ আন্দোলনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
সোমবার আনসারুল্লাহ সদস্য এবং ইয়েমেনের জেনারেল করপোরেশন ফর রেডিও অ্যান্ড টেলিভিশনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুর রহমান আল-আহনুমি তার এক্স অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে বলেন,
‘অধিকৃত গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইয়েমেনি জনগণের সমর্থন বন্ধ করতে ইয়েমেনের মার্কিন দূতাবাস তাদের ভাড়াটে সেনাদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করছে। তবে এদেশে উত্তেজনা বাড়ালে তা মার্কিন সেনা, তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন তেল স্থাপনাগুলো এবং ওয়াশিংটন ও তাদের মিত্রদের জন্য নরকের দরজা খুলে দেবে’।
মার্কিন স্বার্থের ওপর হামলার হুঁশিয়ারি
আহনুমি আরও বলেন, ‘আমরা যেখানেই মার্কিন স্বার্থ বা ঘাঁটি খুঁজে পাব—হোক সেটা আফ্রিকা বা পারস্য উপসাগর—আমরা হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুত। ইয়েমেন বহু আগেই এর জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে’।
একই সঙ্গে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, মার্কিন আগ্রাসনের জবাবে ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী এর আগেও আমেরিকান জাহাজ ও নৌযানগুলোকে বৈধ লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছিল এবং যুক্তরাষ্ট্রকে চড়া মূল্য দিতে হয়েছিল।
তাই নতুন করে উত্তেজনা বাড়ালে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও বড় মূল্য দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন এই আনসারুল্লাহ সদস্য।
মার্কিন ও ব্রিটিশ বিমান হামলা
এদিকে গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মার্কিন ও ব্রিটিশ যুদ্ধবিমান যৌথভাবে ইয়েমেনের উত্তরের হাজ্জা প্রদেশে একটি আক্রমণ চালিয়েছে। লোহিত সাগরে ইসরাইলের সঙ্গে যুক্ত জাহাজগুলোতে আরব দেশটি চলমান সামুদ্রিক অভিযানের মধ্যেই ওই হামলা চালায় পশ্চিমা বাহিনী।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ইয়েমেনের আরবি ভাষার সংবাদমাধ্যম আল-মাসিরা জানিয়েছে, সোমবার সকালের এই বিমান হামলাগুলো মিডি জেলার বুহাইস এলাকায় আঘাত হেনেছে।
এছাড়া কৌশলগত পশ্চিমাঞ্চলীয় হুদেইদা প্রদেশের আত-তুহাইতা জেলাতেও হামলা চালানো হয়। তবে এ হামলায় সম্ভাব্য হতাহতের সংখ্যা বা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
ফিলিস্তিনের প্রতি ইয়েমেনের সমর্থন
ইসরাইল গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় হামলা শুরুর পর থেকে ইয়েমেনি বাহিনী ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি তাদের নিরঙ্কুশ সমর্থন ঘোষণা করে। এরই জেরে লোহিত সাগরে ইসরাইলের সঙ্গে যুক্ত জাহাজগুলোতে ধারাবাহিকভাবে হামলা চালিয়ে আসছে আরব দেশটি।
আনসারুল্লাহ ও ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, ‘গাজায় ইসরাইলের স্থল ও আকাশপথে আক্রমণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের হামলা বন্ধ করব না’।
এদিকে ইসরাইলের অব্যাহত হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় ৪৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক মানুষ।
ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ প্রতিরোধ আন্দোলন একাত্মভাবে ঘোষণা করেছে যে, তারা ফিলিস্তিনি সংগ্রামের পাশে থাকবে। মার্কিন ও পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ট আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। সূত্র: প্রেস টিভি ও মেহের নিউজ