করোনা সংক্রমণ বিস্তাররোধে তৈরি পোশাক শিল্প ও অন্যান্য শিল্পসমূহকে ঈদের আগে পর্যায়ক্রমে ছুটি প্রদানে বিজেএমইএ এবং বিকেএমইএ’র প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে ঈদের আগেই শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ঈদের আগেই শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে মালিকরা বরাবরের মতো এবারও সহমর্মিতার নজির স্থাপন করবেন বলে বিশ্বাস করি।
শনিবার তার রাজধানীর সংসদ ভবনস্থ সরকারী বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের পবিত্র ঈদ-উল-আজহার তিনদিন আগে থেকে সড়ক-মহাসড়কে পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান বন্ধ রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কৃষি, শিল্প ও রফতানিমুখী পণ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ত্রাণ, জ্বালানি, ওষুধ, খাদ্যদ্রব্য, পচনশীল পণ্যসহ জরুরী সার্ভিসের আওতামুক্ত থাকবে। তিনি বলেন, ঈদের আগে পরে ৮ দিন সড়ক-মহাসড়ক সংলগ্ন সিএনজি স্টেশনগুলো ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ফিটনেসবিহীন যানবাহন কোরবানির পশুরহাটে চলাচলে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোরবানির পশুবাহী যানবাহন সাধারণত ধীর গতিতে চলে, এ সব পরিবহন মহসড়কে নষ্ট হয়ে পড়লে তৈরি হয় যানজট। তাই ফিটনেসবিহীন যানবাহনে কোরবানির পশু পরিবহন থেকে বিরত থাকুন। ইতোমধ্যে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
পশুরহাটের অনুমতি প্রদানের ক্ষেত্রে আবারও স্মরণ করে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়ক-মহাসড়কের উপরে কিংবা আশপাশে পশুরহাট বসানো যাবে না। প্রয়োজনে এ বছর কমসংখ্যক হাট বসানোর বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে অনলাইনে পশু বেচা-কেনার বিষয়টিও বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
জীবনের পাশাপাশি অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের যে অবস্থান তা এগিয়ে নিতে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাও আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ধর্মীয় অনুভূতির পাশাপাশি কোরবানি ঈদ কেন্দ্রিক অর্থনীতির সঙ্গে অনেক মানুষের জীবন ও জীবিকা সংযুক্ত, পশুপালন, এ্যানিম্যাল ফার্মিং, পশুর চামড়া রফতানিসহ ঈদ-অর্থনীতি দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
‘বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ এবং শিক্ষার্থীরা মেসে থাকছে ভাড়া নিয়ে, তাদের মালপত্র ফেলে দেয়া হচ্ছে’- এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, সঙ্কটে অনেকের আয় কমেছে, হারিয়েছে চাকরি, আবার কেউ কেউ পরিবার নিয়ে কষ্টে জীবনযাপন করছেন, এমন পরিস্থিতিতে একে অপরের প্রতি সমব্যথী হতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণ খাতের অধিকাংশ ঋণগ্রহীতা প্রান্তিক ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী করোনার আকস্মিক অভিঘাত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আয় ও জীবনযাপনে ফেলেছে নেতিবাচক প্রভাব, অনেকেই সঞ্চয় ভেঙ্গে চলছে, অন্যদিকে ঋণ গ্রহীতাদের অনেকে ঋণের কিস্তি দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এমতাবস্থায় তাদের উপর কিস্তি শোধের বাড়তি চাপ-জীবনযুদ্ধ থেকে তাদের ছিটকে দিতে পারে, ভেঙ্গে দিতে পারে মনোবল। শেখ হাসিনা সরকার অর্থনীতির প্রতিটি খাতকে চাঙ্গা রাখতে বাজেটে প্রণোদনাসহ নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানায় তিনি।