রমজানের ঈদকে সামনে রেখে ১০ মে থেকে দোকান-পাট ও শপিং মল খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। বেশ কয়েকটি শর্ত মেনে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সারা দেশের শপিং মলগুলো খোলা রাখা যাবে।
সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ছুটি বর্ধিতকরণ আদেশে এ অনুমতির কথা বলা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়, ‘রমজান এবং ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে ১০ মে থেকে সীমিত পরিসরে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখার স্বার্থে দোকান-পাট খোলা রাখা যাবে; তবে ক্রয়-বিক্রয়কালে পারস্পারিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘বড় বড় শপিংমলের প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এবং শপিংমলে আগত যানবাহনসমূহকে অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। সেইসাথে দোকনপাট এবং শপিংমলসমূহ আবশ্যিকভাবে বিকাল ৪টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।’
এরআগে সোমবার সকালে গণভবন থেকে রংপুর বিভাগের জেলাপ্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ ইফতার ও সেহেরি করতে যাতে কোন সমস্যার সম্মুখীন না হয়, সেজন্য সরকার হাটবাজার এবং দোকানপাট খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এতে করে ঈদকে সামনে রেখে জনগণ কেনাকাটা করতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি জেলায়, বিভিন্ন জেলাভিত্তিক যেসব ছোটখাট শিল্প রয়েছে, সেগুলো তারা চালাতে পারবেন। সেভাবে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি। অর্থনীতির চাকা যাতে গতিশীল থাকে, মানুষকে সুরক্ষিত রেখে ও তাদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখে সেগুলো যেন পরিচালিত হতে পারে, সে জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বেশকিছু নির্দেশনা আপনারা শিগগিরই পাবেন।
তিনি বলেন, সরকারি অফিস-আদালত সব আমরা চালু করে দিচ্ছি। যাতে মানুষের কষ্ট না হয় এবং সামনে ঈদের আগে মানুষ যাতে কেনাকাটা বা যা যা দরকার সেটা যেন মানুষ করতে পারে। তার সরকার জনগণের যোগাযোগ এবং ডাক ব্যবস্থা কার্যকর রাখার স্বার্থে ধীরে ধীরে রেল যোগাযোগও চালু করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ঈদের ছুটিতে কেউ বাড়ি যেতে পারবেন না
করোনা ভাইরাসের কারণে ষষ্ঠ দফায় আবারও ১১ দিন ছুটি বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে ঈদুল ফিতরের সরকারি ছুটিতে কেউ কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না বলেও জানানো হয়েছে। সোমবার (০৪ মে) দুপুরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ প্রজ্ঞাপন জারি করে।
করোনার কারণে সরকার প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে। পরে আরও পাঁচ দফায় ছুটি বাড়িয়ে ১৬ মে পর্যন্ত করা হলো। ছুটি বাড়ানোর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ৭ মে থেকে ১৪ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ ছুটির সঙ্গে ৬ মের বুদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি এবং ১৫ ও ১৬ মের সাপ্তাহিক ছুটিও যুক্ত হবে।
এই নির্দেশনার কারণে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যে যেখানে দায়িত্ব পালন করছেন সেই অঞ্চলের বাইরে যেতে পারবেন না। আদেশে বলা হয়, ছুটিকালীন জনসাধারণ ও সকল কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশমালা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
জরুরি পরিষেবা যেমন- বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীরা এ ছুটির বাইরে থাকবেন।
শর্ত সাপেক্ষে দোকান ও শপিংমল খোলার অনুমতি
রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে সীমিত পরিসরে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আলাদা আদেশ জারি করে এ নির্দেশনা দেয়।
বড় বড় শপিংমলের প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আসা যানবাহনকে অবশ্যই জীবাণুমুক্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে। আর দোকান-পাট এবং শপিংমল আবশ্যিকভাবে বিকাল ৫টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।
এদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আরেক আদেশে সাধারণ ছুটি ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ১৬ মে পর্যন্ত থাকবে সাধারণ ছুটি। এর মধ্যে ৬ মে বুদ্ধ পূর্ণিমার সরকারি ছুটি, ৮ ও ৯ মে এবং ১৪ ও ১৫ মের সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোও এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ছুটির বাইরে থাকবে জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীরা।
এছাড়া উৎপাদন ও রপ্তানিসহ সব কলকারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করে চালু রাখতে পারবে।
সড়ক ও নৌপথে সব ধরনের পণ্য পরিবহনের সঙ্গে নিয়োজিত যানবাহন চলাচল অব্যাহত থাকবে। তবে সাধারণ ছুটির সময় কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে না।