ক্যাম্পাসের বাইরে স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষের পরদিন নিরাপত্তার দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যে সব হলের তালা ভেঙে ফেলেছেন শিক্ষার্থীরা।
কয়েকশ শিক্ষার্থী শনিবার বেলা ১টার দিকে তালা ভাঙা শুরু করেন। প্রথমে আল বেরুনি হল, তারপর ফজিলাতুন্নেসা এবং একে একে ১৬ হলের সবগুলোরই তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন তারা। তবে তারা হলে অবস্থান না করে বাইরে চলে যান। ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন গেরুয়া এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে তাদের অভিযোগ। ওই সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৩০ শিক্ষার্থী আহত হন।
এর পরদিন শনিবার বেলা ১১টার দিকে কয়েকশ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জড়ো হন। সেখান থেকে মিছিল যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে। সেখানে অবস্থান নিয়ে তারা ‘এক দফা এক দাবি, আজকে হল খুলে দিবি’ শ্লোগান দেন। পরে তারা তালা ভাঙা শুরু করেন।
তালা ভাঙার প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি মোতাহার হোসেন বলেন, শনিবারই শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের মিটিং আছে।
“সেখান থেকে আমরা আশা করছি কোনো দিকনির্দেশনা আসতে পারে।”
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা গেরুয়া এলাকার প্রসঙ্গ তুলে চার দফা দাবি পেশ করেছেন।
সাত দিনের মধ্যে গেরুয়া এলাকার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার, আহত শিক্ষার্থীদের দায়ভার প্রশাসনের গ্রহণ, প্রক্টরের বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি অবিলম্বে প্রক্টরের পদত্যাগ ও হলে শিক্ষার্থীদের সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
সংঘর্ষে শিক্ষার্থীদের আহত হওয়া প্রসঙ্গে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেছিলেন, ক্যাম্পাসের বাইরের শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব তারা নেবেন না।
এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায়।
শনিবার বেলা ১২টার মধ্যে হল না খুললে তালা ভাঙার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
রাকিবুল হক রনি নামে আন্দোলনকারী একজন শিক্ষার্থী বলেন, “গেরুয়া এলাকার ঘটনায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
করোনাভাইরাস মহামারীতে বিশ্ববিদ্যালয় হল বন্ধ ঘোষণা করলে এসব শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে গেরুয়া, আমবাগান, ইসরামনগরসহ বিভিন্ন গ্রামে ভাড়া বাসায় ও মেসে থাকছিলেন।
হল খোলার প্রতিক্রিয়ায় প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, “কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে হল খোলা হয়নি। সরকারি সিদ্ধান্ত না আসলে আমরা হল খোলার সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।”