বিশ্ব বাণিজ্যায়নের প্রেক্ষাপটে উদ্ভিদের নতুন জাত উদ্ভাবন ও স্থানীয় জনপ্রিয় জাতগুলোকে বিলুপ্তি থেকে রক্ষা করতে নতুন আইন করার প্রস্তাব সংসদে পাস হয়েছে।
রোববার কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এ সংক্রান্ত ‘উদ্ভিদের জাত সংরক্ষণ বিল-২০১৯’ সংসদে পাসের প্রস্তাব করেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
এর আগের বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করা হয়।
গত ১০ মার্চ বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন কৃষিমন্ত্রী। পরে বিলটি ৪৫ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পির্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিলে উদ্ভিদের জাত সংরক্ষণ, কৃষক ও প্রজনবিদদের অধিকার রক্ষায় ‘উদ্ভিদের জাত সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ’ নামে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার বিধান রাখা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সরকারের নিয়োগ করা ব্যক্তি হবেন বলে বিলে বিধান রাখা হয়েছে।
উদ্ভিদের গণ ও প্রজাতি নির্ধারণও এই কর্তৃপক্ষের কাজ হবে। বিলে বলা হয়েছে কর্তৃপক্ষ প্রজনবিদ বা কৃষকের উদ্ভাতি জাত ‘সংরক্ষিত জাত’ হিসেবে নিবন্ধন করবে।
বিলে উদ্ভিদের জাত সংরক্ষণ ও উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, সম্প্রদায় বা সংস্থার অনুকূলে ‘স্বীকৃতিসনদ’ দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ দেশে উদ্ভিদের জাত সংরক্ষণ ও উন্নয়নে অবদানের গুরিুত্ব বিবেচনা করে, প্রাতিষ্ঠানিক বা অপ্রাতিষ্ঠানিক যাই হোক না কেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ভিশেষ গবেষণা অনুদান বা আর্থিক পুরস্কার দিতে পারবে।
কোন ব্যক্তি সংরক্ষিত জাতের মিথ্যা নাম দিলে বা নিবন্ধিত কোন জাতের বাণিজ্যিক ব্যবহারের সময় স্বেচ্ছায় কোনো দেশ বা স্থান, প্রজননবিদ তার ঠিকানা সংক্রান্ত মিথ্যা তথ্য ব্যবহার করলে দুই ব্ছর পযৃয়ন্ত জেল বা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে কৃষিমন্ত্রী বলেন, “নতুন উদ্ভাবিত জাতের অধিকার সুরক্ষার জন্য আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, চীন, কোরিয়াসহ বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়শীল দেশে উদ্ভিদের জাত সংরক্ষণ আইন কার্যকর রয়েছে।”
“বাংলাদেশেও উদ্ভিদের গবেষণা, জাতের উন্নয়ন, বীজ উৎপাদন, ব্যবহার, বিতরণ, বিপণন, রপ্তান্তি ও প্রজনন ও জাত সংরক্ষণের সুফল কৃষকদের কাছে কার্যকরভাবে পৌঁছে দেয়ার জন্য উৎসাহ, নির্দেশনা ও সহায়তা প্রদান করা প্রয়োজন।”
মন্ত্রী আরও জানান, কৃষিক্ষেত্রে মেধাস্বত্ব অধিকার সংরক্ষণের জন্য ‘উদ্ভিদের জাত সংরক্ষণ বিল’ প্রণয়ন করা হয়েছে।”
ভেটেনারি কাউন্সিল বিল উত্থাপন
এর আগে মৎস ও প্রাণি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু ‘বাংলাদেশ ভেটেনারি কাউন্সিল বিল-২০১৯’ সংসদে তোলেন। পরে বিলটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মৎস ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
১৯৮২ সালের ‘বাংলাদেশ ভেটেনারি প্রাকটিশনারস অর্ডিন্যান্স’ বাতিল করে নতুন আইন করতে বিলটি তোলা হয়েছে।