করোনার প্রভাবে ঋণ পরিশোধ না করলেও খেলাপি না করার সময়সীমা আরও তিন মাস বাড়াল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কেউ ঋণ পরিশোধ না করলে তাকে খেলাপি করা যাবে না। সোমবার এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়।
করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর গত ১৯ মার্চ সার্কুলার জারি করে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত কেউ ঋণ পরিশোধ না করলে তাকে খেলাপি না করতে বলা হয়। পরে সময় বাড়িয়ে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়। এখন আরেক দফা সময় বাড়িয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হলো।
বিশেষ সুবিধার কারণে অপরিশোধিত এসব ঋণের ওপর আরোপিত সুদ ব্যাংকের আয় খাতে স্থানান্তর ও প্রভিশন সংরক্ষণ বিষয়ে পরে নির্দেশনা দেওয়া হবে। একটি সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের এ সময়ে অনাদায়ী ঋণ বিশেষ সুবিধায় নিয়মিত দেখাতে পারলেও এসব ঋণের সুদ আয় খাতে নেওয়া যাবে না।
সার্কুলারে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতির অধিকাংশ খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর নেতিবাচক প্রভাব দীর্ঘায়িত হওয়ার শঙ্কা থাকায় অনেক শিল্প, সেবা ও ব্যবসা খাত তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। এসব বিবেচনায় ও ঋণ গ্রহীতার ব্যবসার ওপর করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব সহনীয় মাত্রায় রাখতে ঋণ পরিশোধসূচি নির্ধারণ ও শ্রেণিকরণের ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা দেওয়া হলো। এতে করে ১ জানুয়ারি ঋণের শ্রেণিমান যা ছিল, আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার চেয়ে বিরূপমানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না। তবে কোনো ঋণের শ্রেণিমানের উন্নতি হলে তা যথাযথ নিয়মে শ্রেণিকরণ করতে হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, স্বল্পমেয়াদি কৃষি ও ক্ষুদ্রঋণসহ বিদ্যমান মেয়াদি ঋণের অপরিশোধিত কিস্তি বিলম্বে পরিশোধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে আগামী জানুয়ারি থেকে অপরিশোধিত ঋণের কিস্তির পরিমাণ ও সংখ্যা পুনর্নির্ধারিত হবে। পুনর্নির্ধারণের সময় জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত যতসংখ্যক অপরিশোধিত থাকবে সমসংখ্যক কিস্তি বাড়বে। আর বিদ্যমান চলমান ও তলবি ঋণ সমন্বয়ের তারিখ বিদ্যমান মেয়াদ থেকে ১২ মাস বা চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়বে। কোনো গ্রাহক পূর্বনির্ধারিত পরিশোধসূচি বা ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণ সমন্বয় করতে চাইলে করতে পারবেন। এ ছাড়া কোনোভাবে দণ্ড সুদ বা অতিরিক্ত ফি আরোপ করা যাবে না।