দেশে ‘একনায়কতন্ত্র’ জেঁকে বসেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এর থেকে ‘গণতন্ত্রে ফেরার’ জন্য ‘ইস্পাত কঠিন’ ঐক্য নিয়ে আন্দোলনে নামতে হবে।
নিজেদের দল ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর পাশাপাশি অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও এই ঐক্য দরকার বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
শুক্রবার বিকালে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা এখন যে সংগ্রাম করছি, যে লড়াই করছি- সেটা আমাদের বাঁচা মরার লড়াই, এটা আমাদের অস্তিত্বের লড়াই, আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের লড়াই।
“আমরা জানি যে, এই সংগ্রাম খুব কঠিন। ডিক্টেটরশিপ থেকে ডেমোক্রেসি থেকে ফিরে আসা- এটা খুব কঠিন লড়াই। সেই লড়াইয়ে আমাদের জয়ী হতে হবে। সেজন্য আমাদের এ্খন যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে ইস্পাত কঠিন ঐক্য। একদিকে আমাদের বিএনপির ঐক্য, সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর ঐক্য এবং অন্যদিকে একটা জাতীয় ঐক্য।
“জাতীয় ঐক্য তৈরি করেই আমাদেরকে অবশ্যই এই ভয়াবহ যে দানব আমাদের বুকের ওপর চেপে বসে আছে, এই যে ভয়াবহ একটি একদলীয় শাসন ব্যবস্থা আমাদের ওপরে চেপে বসেছে- একে সরাতে হবে।”
সরকার বিএনপির ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে আসছে অভিযোগ করে তার সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের অনেক মানুষ ত্যাগ স্বীকার করেছেন, ৩৫ লক্ষ মানুষ আসামি হয়েছেন, এক লক্ষের উপরে মামলা হয়েছে। আমাদের হাজারের উপরে মানুষ খুন হয়ে গেছে। আমাদের ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ পাঁচশ’র উপরে গুম হয়ে গেছেন। অসংখ্য মামলায় জর্জরিত আমাদের সমস্ত নেতা-কর্মী। এই নিপীড়ন থেকে এমনকি আমাদের চিকিৎসকরাও রেহাই পাননি।”
তিনি বলেন, “আজকে এই কোভিডের ফলে দেশে যে অর্থনৈতিক দুরাবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে, মানুষ যে অসহায় অবস্থা পড়ছে- এর থেকেও আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
“একদিকে যেমন করোনা প্রতিরোধের জন্য আমরা সবাই একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করছি, বিএনপি, অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠনগুলো-ড্যাব একইভাবে আজকে গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য, মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনবার জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি আমাদের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক তাকে মুক্ত করবার জন্য, আমাদের নেতা যিনি সম্ভাবনাময় আমাদের তরুণ নেতা তারেক রহমান সাহেবকে ফিরিয়ে আনবার জন্যে আমরা যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু করেছি, সেই আন্দোলনকে ঈপ্সিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে।”
বিএনপি সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব’র ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়। অনুষ্ঠানে ড্যাবের ওপর প্রামাণ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
১৯৭৯ সালের এই দিনে ড্যাব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সাবেক সামরিক শাসক বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান।
ড্যাবের সভাপতি ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুস সালাম ও সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সেলিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল ম্ঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ড্যাবের অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, জহিরুল ইসলাম শাকিল, মেহেদি হাসান বক্তব্য রাখেন।
এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় ড্যাবের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক একেএম আজিজুল হক, মহাসচিব অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনসহ বিভিন্ন জেলার চিকিৎসকরা যুক্ত ছিলেন।