মোহাম্মদ মিঠুন ব্যাটিং শেষ করার ২০ মিনিট পর অনুশীলন শুরুর কথা ছিল মুশফিকুর রহিমের। তবে অতোটা সময় অপেক্ষা না করে তিনি মাঠে চলে এলেন সাত সকালে। নির্ধারিত সময়ের তিন ঘণ্টা আগে সাড়ে আটটায় শুরু করলেন রানিং। শুরু হলো বিসিবির তত্ত্বাবধানে ক্রিকেটারদের একক পর্যায়ের অনুশীলন। শুরুর দিনে ক্রিকেটাররা জানালেন, মাঠে ফিরতে কতটা উন্মুখ তারা।
দেশের তিনটি ভেন্যুতে রোববার অনুশীলন করেছেন আট ক্রিকেটার। মুশফিক ও মিঠুন ছাড়া মিরপুরে ছিলেন শফিউল ইসলাম। খুলনায় কিপার-ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান ছাড়াও অনুশীলন করেন দুই অফস্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
সিলেটে শুরুর দিনে ছিলেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও নাসুম আহমেদ। তরুণ অফস্পিনার নাঈম হাসান জানান, বৃষ্টির জন্য চট্টগ্রামে অনুশীলনে যেতে পারেননি তিনি। সোমবার মিরপুরে অনুশীলন শুরু করবেন ইমরুল কায়েস।
ট্রেনারের তত্ত্বাবধানে চলে ক্রিকেটারদের রানিং। নেটে ছিলেন না কোনো বোলার। মুশফিক-মিঠুনরা ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন বোলিং মেশিনে।
গত ১৫ ও ১৬ মার্চ এক রাউন্ড খেলা হয়ে এবারের প্রিমিয়ার লিগ স্থগিত হয়ে গেছে করোনাভাইরাসের প্রকোপে। কবে খেলা শুরু হবে, এর কোনো ঠিক নেই। তবে ক্রিকেটাররা প্রস্তুত থেকে কাজ কিছুটা এগিয়ে রাখতে চান। প্রথম দফায় ১০ ক্রিকেটার ২৬ জুলাই পর্যন্ত অনুশীলন করবেন।
১০টা ১০ মিনিটে ব্যাটিং দিয়ে অনুশীলন শুরুর কথা ছিল মুশফিকের। অনুশীলনে বরাবরই আগে আসা এই কিপার-ব্যাটসম্যান মাঠে আসেন এর অনেক আগে। সাড়ে আটটা থেকে ট্রেনারের তত্ত্বাবধানে আধ ঘণ্টা করেন রানিং।
মাঠে এসে সোজা ইনডোরে চলে যান মিঠুন। ঘণ্টা খানেক পর তার অনুশীলন শেষ হলে জীবাণুমুক্ত করা হয় সব কিছু। এরপর ঢুকেন মুশফিক। ঘণ্টা খানেক চলে তার ব্যাটিং অনুশীলন।
ইনডোর থেকে জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি মাঠে যান মিঠুন। সেখানে ২৫-৩০ মিনিট রানিং করেন তিনি। ১১টার পরপর আসেন শফিউল। প্রথম দিন আধ ঘণ্টার মতো অনুশীলন করেন তিনি। দীর্ঘ বিরতির পর মাঠে ফেরার স্বস্তি শোনা গেল এই পেসারের কণ্ঠে।
“শুরু করলাম, শুরুর দিকে কিছু সমস্যা তো থাকবেই। শুরুর দিকে মানিয়ে নিতে কিছুটা ঝামেলা হয়তো হবে, বিশেষ করে ফিটনেস নিয়ে। তবে বোলিং নিয়ে হয়তো অতোটা সমস্যা হবে না। শুরুর দিকে ছন্দ পেতে একটু সমস্যা হতে পারে, কিন্তু সেটা ঠিক হয়ে যাবে।”
চোটের জন্য প্রায় ১১ মাস মাঠের বাইরে ছিলেন খালেদ। প্রিমিয়ার লিগ দিয়ে খেলায় ফেরার পর অনাকাঙ্ক্ষিত বিরতি। দেশের হয়ে দুটি টেস্ট খেলা এই পেসারের ভাবনা দ্রুত ছন্দ ফিরে পাওয়ার দিকে।
“প্রথম দিন মাঠে গিয়ে খুব ভালো লাগছে। আমাদের স্টেডিয়াম এমনিতেই সুন্দর, এখন নতুন ঘাস উঠেছে, চারপাশ সবুজের মেলা। সব মিলিয়ে প্রথম দিন ভালো কেটেছে।”
“বোলিং করার অনুমতি এখনও দেয়নি। আগে ফিটনেস, এরপর বোলিং। বোলিংয়ের যখন অনুমতি মিলবে তখন কীভাবে করব, এটা নিয়ে ভাবছি। কারণ, অনেক সময় এর মাঝে চলে গেছে। ছন্দের একটা ব্যাপার তো থাকেই।”
এতো দিন নিজের মতো করে অনুশীলন করেছেন সোহান। আনুষ্ঠানিকভাবে একক পর্যায়ে অনুশীলন শুরু হওয়ার পর এই কিপার-ব্যাটসম্যান অধীর আগ্রহে মাঠে ক্রিকেট ফেরার অপেক্ষায় আছেন।
“আগে মনে হতো, কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। আজ অনুশীলন শুরুর পর মনে হচ্ছে, শুরু যখন হয়েছে আস্তে আস্তে সব ঠিক হবে। অনেক দিন পর মাঠে এসে অন্যরকম এক ভালো লাগা কাজ করছে। এখন মনে হচ্ছে এক সময়ে মাঠে ক্রিকেট ফিরবে, এটা স্বস্তির জায়গা।”
চার মাস পর মাঠে অনুশীলনে ফিরে সব কঠিন মনে হচ্ছে মিঠুনের।
“এতো দিন সব ইনডোরে করেছি, বাইরে মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগবে। আশা করছি, ধীরে ধীরে আমরা সব কিছুই আবার আগের মতো ফিরে পাব।”