বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ছাত্ররা রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলছে। তারা বলছে সংবিধানও সংস্কার করতে হবে। সংবিধান পরিবর্তন কিভাবে করবেন? একটা সংস্কার কমিটি দিয়েই সংবিধান সংস্কার হবে না। ওটা করতে গেলে সাংবিধানিক কিংবা সংসদের প্রতিনিধি লাগবে। সেটার জন্য ধৈর্য ধরতে হবে।
তিনি বলেন, সবচেয়ে প্রধান যে জিনিসটা দরকার, সেটি হলো নির্বাচন। একদিকে যেমন পরিবর্তনের জন্য জীবন দিয়েছে, তেমনি নির্বাচনের জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। যার জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছে। হঠাৎ করেই কোনো কিছু পরিবর্তন করে ফেললে হবে না। সেটা কতটা টেকসই সেই চিন্তাও করতে হবে। তার জন্য গণতান্ত্রিক পথে যেতে হবে। তারা যদি বলত বিপ্লবী সরকার গঠন করেছি, তাহলে বিপ্লবী সরকার করত। আমাদের কিছু বলার ছিল না। এটা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) বিপ্লবী সরকার নয়, সাংবিধানিক সরকার। আপিল বিভাগ থেকে এই সরকারের বৈধতা নেওয়া হয়েছে। ওটাকে ধরে রেখেই আমাদের এগোতে হবে।
শুক্রবার রাতে জিলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা বিএনপির আয়োজিত ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী দীর্ঘ আন্দোলন : আজকের প্রেক্ষিত নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের সামনে বড় ক্রান্তিকাল। ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা ফ্যাসিস্টকে বিদায় দিয়েছি। আমাদেরকে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। আমাদেরকে সঠিকভাবে রূপান্তর ঘটাতে হবে। যে রূপান্তরের মধ্যদিয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, চেতনাকে ফিরে এনে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক, মানবিক মূল্যবোধ, কল্যাণকর দেশ গড়তে পারি। এটাই আমাদের সামনে লক্ষ্য।
সভায় বিগত দেড় দশকে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রাম, হামলা, মামলার কথা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের গোলটা দিয়েছে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান। এটা অস্বীকার করা যাবে না। এজন্য তাদেরকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর প্রেসক্লাব সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, মানবাধিকার সংগঠক বিনয়কৃষ্ণ মল্লিক, ক্রীড়া সংগঠক চিন্ময় সাহা, যশোর আদালতের জিপি শেখ আবদুল মোহায়মেন, কওমি মাদ্রাসা খুলনা বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল মান্নান, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতন সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি আকরামুজ্জামান, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি শ্যামল দাস, চিকিৎসক সমাজের প্রতিনিধি ডা. রবিউল ইসলাম যশোর জেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবাদত হোসেন খান।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সাবেরুল হক সাবু।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব, সাবিরা নাজনীন মুন্নী, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুল হুদা প্রমুখ।