সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একচেটিয়া জয়ের দিকে ইঙ্গিত করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, একটি দলই বারবার জিতছে বলে অন্য দলগুলোর টিকে থাকা দুরূহ হয়ে পড়েছে।
পৌর ভোটের মধ্যে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরদিন বৃহস্পতিবার ঢাকার বনানীতে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতেছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। পৌরসভাগুলোতেও জয়জয়কার নৌকার প্রার্থীদের।
ভোটে ভোটারদের অনাগ্রহের বিষয়টি তুলে ধরে জিএম কাদের বলেন, “দেশের মানুষ নির্বাচনের প্রতি অনীহা প্রকাশ করেছে। দেশের মানুষ এখন আর নির্বাচনে ভোট দিতে যায় না।
“ক্ষমতা গ্রহণের মাধ্যমে মানুষের সেবা করতেই রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনীতি। আর ক্ষমতা গ্রহণের একমাত্র পথ হচ্ছে নির্বাচন। কিন্তু এখন শুধু একটি দলই নির্বাচনে জয়লাভ করছে। তাই অন্যান্য দলগুলোর রাজনীতিতে টিকে থাকাই দুরূহ হয়ে পড়ছে।”
প্রশ্ন থাকলেও জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনগুলোতেও অংশ নিয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
গাজীপুর জেলা জাতীয় পার্টি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন জিএম কাদের।
সভায় জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, “দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।
“প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও জাতীয় পার্টি প্রতিটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভোটারদের সামনে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের উন্নয়ন এবং সুশাসনের চিত্র তুলে ধরা হবে।”
সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা কাদের বলেন, “আদালতের রায়ে ১৯৯০ সালের পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে, যা স্বৈরতন্ত্র। সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে একটি দল সরকার গঠন করে সেই দলের প্রধান সংসদ ও সরকার প্রধান হন। সংবিধানের ৭০ ধারার কারণে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বাইরে সরকারদলীয় সদস্যরা সংসদে ভোট দিতে পারে না। তাই প্রধানমন্ত্রী যা চান তাই পাস হয়, তিনি যা চান না, তা পাস হয় না।”
করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে তিনি বলেন, “এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিন নিয়ে সরকারের নীতিমালা সাধারণ মানুষের কাছে পরিষ্কার নয়।”
বাবলু বলেন, “দেশে জবাবদিহিতা নেই। তাই সরকার দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে চিন্তিত নয়। সরকারি দলের নেতারা নিজেদের ভাগ্য নিয়ে ব্যস্ত।
“দেশের ৪২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করছ। আবার করোনাকালে প্রায় দেড় কোটি মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। অথচ সরকার মানুষের দুঃখ-কষ্ট বোঝে না।”