বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ভোট নয়, আওয়ামী লীগের কাউন্সিল। যেমন খুশি তেমন প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী) গণভবনে মনোনয়ন বঞ্চিতদের সমাবেশে দলীয় প্রার্থীদের একজন করে ডামি প্রার্থী রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, মনোয়ন বঞ্চিতদের বলা হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে। বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন। তার মানে নৌকা ভার্সেস আওয়ামী লীগ! নিজেরা নিজেরাই।
রিজভী বলেন, ব্যাপারটা দাঁড়িয়েছে যেন এ রকম- আমি, আমরা আর মামুরা। নির্বাচন হবে আমি আর মামুদের মধ্যে! পাতানো ম্যাচ খেলবো দুজন-তুমি আর আমি। আর সাইড লাইনে থাকবে টাকার বিনিময়ে খরিদ করা ‘কিংস পার্টি’সহ ভূঁইফোড় পার্টির নেতারা। আসন্ন নির্বাচনে শেখ হাসিনার ফর্মূলাকে সরকার পরিবর্তনের ভোট না বলে দলীয় কাউন্সিল বলা যেতে পারে।
সোমবার বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী) সারা পৃথিবীর মানুষকে বোকা বানাতে চান। তবে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ আর আন্তর্জাতিক মহলকে এ হাস্যকর সাজানো নাটক দিয়ে নয়ছয় বোঝানো সম্ভব নয়। নির্বাচনের নামে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের কারাগারে ভরে নির্বাচনী সার্কাস করে লাভ নেই।
তিনি বলেন, বারবার ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার ঘুঘু বধ করতে ১৮ কোটি জনগণের সঙ্গে আছেন গোটা গণতান্ত্রিক বিশ্ব। আদালত, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনা রাখেন নিজের হাতের মুঠোয়। তার অধীনে চোখ ধাঁধানো জালিয়াতির নির্বাচন হবে। যা এক নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে প্রহসনের নির্বাচনের ইতিহাসে আর একটি অভিনব অধ্যায় হিসেবে যুক্ত হবে।
আওয়ামী নাৎসিবাদ এখন বাংলাদেশে জার্মানির মতো হুবহু পৈশাচিকতায় প্রয়োগ করা হচ্ছে। হিটলার যেমন ইহুদিদের বিরুদ্ধে ‘হেট স্পিচ’ অর্থাৎ ঘৃণা বক্তব্য রাখতেন ঠিক তেমনিভাবে প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রীরা বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল বা নাগরিক সমাজের বিরুদ্ধে ‘হেট স্পিচ’ দিয়ে যাচ্ছেন।
১৫ নভেম্বর তফশিল ঘোষণার পর থেকে সোমবার পর্যন্ত গ্রেফতার ও মামলার তথ্য তুলে ধরেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, তফশিল ঘোষণার পর থেকে মোট গ্রেফতার হয়েছেন ৪ হাজার ৯৯৫ জনের অধিক নেতাকর্মী। মামলা ১৬৬টি, যেখানে আসামি ১৯ হাজার ৩১০ জনের অধিক নেতাকর্মী, মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের।