বিগত এক দশকে কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের কাছে সরকার ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৮৩ কোটি ৯১ লাখ টাকার দেনা হয়েছে বলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সংসদে প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন, সরকার ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর নাগাদ বাংলাদেশ ব্যাংক ও তফসিলি ব্যাংক থেকে ১৩ লাখ ২৭ হাজার ৬২৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে। এই সময়ে পরিশোধ করা হয়েছে ১১ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
“অর্থ্যাৎ এই সময়ে নিট ঋণ গ্রহণ করেছে এক লাখ ৯৫ হাজার ৭৮৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা।”
আরেক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ হিসেবে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪টি উন্নয়ন সহযোগী দেশ/সংস্থার সাথে তিন হাজার ১২০ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন ডলারের (দুই হাজার ৬২১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা) ৩৪টি ঋণ ও অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
“এর মধ্যে ১৪টি ঋণ চুক্তির সংশ্লেষ অর্থের পরিমাণ দুই হাজার ৪৫৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা এবং ২০টি অনুদান চুক্তির সংশ্লেষ অর্থের পরিমাণ ১৬৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা।”
প্রশ্নোত্তরে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণ/সহায়তার পরিমাণ দুই হাজার ৭১৭ দশমিক ৫৬ মিলিয়ন ডলার (২৩ হাজার ২৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা)।
বর্তমানে দেশে ব্যক্তি পর্যায়ে করদাতার সংখ্যা ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ৬৬৬ জন বলে জানান তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বরের তথ্য অনুযায়ী দেশে ঋণ হিসাব সংখ্যা ১ কোটি ৭ লাখ। আর ঋণের স্থিতি ৯ লাখ ৬৯ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, “বর্তমানে শেয়ারবাজারে কিছু তারল্য সংকট থাকলেও ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট নেই। অবশ্যকীয় নগদ জমা (সিআরআর) সংরক্ষণ ও আবশ্যকীয় সহজে বিনিময়যোগ্য সম্পদ (এসএলআর) সংরক্ষণের পরও তফসিলি ব্যাংকগুলোর কাছে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে।
“এ তারল্যের পরিমাণ ২০১৯ সালের জানুয়ারির ৬৭ হাজার ৬০১ কোটি টাকা থেকে ৫৭.৯৫% বৃদ্ধি পেয়ে ডিসেম্বরে এক লাখ ৬ হাজার ১০১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।”
শেয়ারবাজারে দরপতনে ২০১০-১১ সাল থেকে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ১২ হাজার ৯০ কোটি ৭ লাখ টাকা হারিয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “ব্যাংকিং খাতে ঋণ আদায়ের হার কম হওয়ায় এবং প্রাইভেট সেক্টরে ঋণের সরবরাহ কমে যাওয়ায় ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতও পুঁজিবাজারে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে বিনিয়োগ করছে না। ফলে কিছু তারল্য সংকটে পড়েছে।”
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার সংসদে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।