ব্যাংক থেকে মজুরির টাকা তুলতে গিয়ে নতুন দুর্ভোগে পড়েছেন পাটকল শ্রমিকরা। ব্যাংকগুলোর এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় এই দুর্ভোগ তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরই খালিশপুর এলাকার সব এটিএম বুথে টাকা শেষ হয়ে যায়। শুক্রবার সকালে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বুথে টাকা দিলেও ১১টার মধ্যে তা শেষ হয়ে গেছে। ফলে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা থাকলেও তা হাতে পাচ্ছেন না শ্রমিকরা।
খুলনার প্লাটিনাম জুট মিলের স্থায়ী শ্রমিক আবুল বাসার জানান, দীর্ঘদিন আন্দোলনের পর বৃহস্পতিবার তাদের ১০ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি ও ঈদ বোনাস দেওয়া হয়েছে। তার ব্যাংক হিসাব নম্বর সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের খালিশপুর শাখায়। ওই হিসাবেই টাকা জমা করেছে মিল কর্তৃপক্ষ। ব্যাংকের হিসাবে টাকা গেলেও তা তুলতে পারেননি তিনি। কারণ খালিশপুর এলাকার কোনো এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা নেই।
মিজানুর রহমান বলেন, সাড়ে ৫টার দিকে তার অ্যাকাউন্টে সাড়ে ২৪ হাজারের কিছু বেশি টাকা জমা হয়। এরপর তিনি বুথে গিয়ে দেখেন দীর্ঘ লাইন। কিছুক্ষণ পর জানতে পারেন, ওই বুথে টাকা শেষ হয়ে গেছে। এরপর চলে যান ওই এলাকার অন্য আরেকটি ব্যাংকের বুথে। সেখানে গিয়েও দেখেন, শ্রমিকদের লম্বা লাইন। সন্ধ্যার মধ্যে ওই বুথের টাকাও শেষ হয়ে যায়। রাতের মধ্যে খালিশপুর এলাকার প্রায় সব বুথেই টাকা শেষ হয়ে যায়। এ কারণে তিনি টাকা তুলতে পারেননি।
শুধু খালিশপুর নয়, দৌলতপুরের কোনো বুথেও টাকা নেই। ফলে ব্যাংক হিসাবে টাকা গেলেও তা তুলতে পারছেন না শ্রমিকরা। টাকা তুলতে তাদের অপেক্ষা করতে হবে আজ শনিবার পর্যন্ত।
বিজেএমসির আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে জানা গেছে, খুলনা অঞ্চলের ৯টি পাটকলের জন্য ৩৪ কোটি ২৬ লাখ টাকার মজুরি এবং ৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকার বোনাস প্রদান করা হয়েছে। বিজেএমসি থেকে সরাসরি এই টাকা শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চলে গেছে। খুলনার খালিশপুর, দৌলতপুর ও কার্পেটিং জুট মিলে সাত সপ্তাহের মজুরি এবং ক্রিসেন্ট, পল্গাটিনাম, স্টার, জেজেআই, ইস্টার্ন ও আলিম জুট মিলে ১০ সপ্তাহের মজুরি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সব মিলের শ্রমিকরা পেয়েছেন এক সপ্তাহের ঈদ বোনাস।
ক্রিসেন্ট জুট মিল সিবিএ সভাপতি মো. মুরাদ হোসেন জানান, দীর্ঘদিন পর মজুরি পেয়ে শ্রমিকরা বেশি বেশি টাকা তুলেছেন। এ কারণে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে খালিশপুর ও দৌলতপুর এলাকার সব এটিএম বুথে টাকা শেষ হয়ে যায়। শুক্রবার সকাল থেকে শ্রমিকরা বিভিন্ন দূরদূরান্তের এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে আনার চেষ্টা করেছেন। ব্যাংকে জানানোর পর তারা বলছেন, শনিবারের আগে আর এটিএম বুথে টাকা পাওয়া যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।