জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) পরবর্তী ৩৬তম এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন বাংলাদেশে আয়োজন করা হবে।
১ থেকে ৪ সেপ্টেম্বর ভুটানে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত ৩৫তম এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলনে সদস্যভুক্ত দেশগুলো পরের সম্মেলনটি বাংলাদেশে আয়োজনের বিষয়ে সম্মতি দেয় বলে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন।
হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৩ সালে এফএও-তে যোগ দেওয়া বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ২০২২ সালে ৩৬তম এশিয়া-প্যাসিফিক সম্মেলন আয়োজন করবে।
“এই সম্মেলন আয়োজনের বিষয়ে বাংলাদেশের প্রস্তাবের ওপর চীন, ভারত, ভুটান, ইরান, তিমুর, থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্স ও কম্বোডিয়া সরাসরি সমর্থন দিয়েছে এবং সদস্যভুক্ত অন্যান্য দেশ সম্মতি দিয়েছে।
“ঢাকায় ৩৬তম অধিবেশন এই অঞ্চলের দেশগুলোর অর্জন, সাফল্য, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন বিষয়ে মতবিনিময় ও পারস্পারিক সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।”
কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে এবার ভার্চুয়ালি এই সম্মেলন হলেও ২০২২ সালে করোনাভাইরাস থাকবে না বলে আশা করছেন কৃষিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমরা ভালোমত এই সম্মেলন আয়োজন করতে পারব বলেই আশা করছি।”
এর আগে ভারত চার বার; ইন্দোনেশিয়া, জাপান, ফিলিপিন্স, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড তিন বার করে; চীন, কোরিয়া ও ভিয়েতনাম দুই বার করে এবং ভুটান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা একবার করে এই সম্মেলন আয়োজন করেছে।
কৃষিমন্ত্রী জানান, এবারের সম্মেলনে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের ৪৬টি সদস্য দেশের মধ্যে ৪১টি দেশের মন্ত্রী, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি খাত, নাগরিক সমাজ, অ্যাকাডেমিয়া এবং খাদ্য ও কৃষিখাতের কারিগরি বিশেষজ্ঞসহ চারশ’র বেশি প্রতিনিধি অংশ নেন। আর মন্ত্রী পর্যায়ের অধিবেশনে ৩১ জন মন্ত্রী ও ২৮ জন ভাইস মন্ত্রী অংশ নিয়েছেন।
বাংলাদেশের কৃষি, খাদ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাড়াও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এই সম্মেলনে অংশ নেয়।
রাজ্জাক বলেন, এবারের সম্মেলনে সদস্য দেশগুলো ও অঞ্চলের অগ্রাধিকার খাতের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বিশেষ করে কোভিড-১৯ এর প্রভাব, কৃষির সার্বিক অবস্থা, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির নিশ্চয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
“এছাড়া খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির উন্নয়নে পারস্পরিক অংশীদারিত্ব, উদ্ভাবন ও ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের বিষয়েও আলোচনা হয়।”
এবারের সম্মেলনে খাদ্য অপচয় রোধে নতুন বিপণন ব্যবস্থা যেমন ই-কমার্স এবং উন্নতমানের স্টোরেজ ফ্যাসিলিটিজ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয় বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী।
এক প্রশ্নে রাজ্জাক জানান, বাংলাদেশে আলু স্টোরেজ করা হয়। আগামীতে ভুট্টা, টমেটো ও আম প্রক্রিয়াজাত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, খাদ্য সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম এবং এফএও’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি. সিম্পসন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।