অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের সাংসদ সামশুল হক চৌধুরী ও নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনসহ ২২ জনের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন দুদকের এ সংক্রান্ত অনুসন্ধান দলের প্রধান সৈয়দ ইকবাল হোসেন।
চিঠিতে বলা হয়, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দেশে মানি লন্ডারিংসহ বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধানে বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
“বিশ্বস্ত সূত্রে দুদক জেনেছে অভিযোগসংশ্লিষ্টরা দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই তারা যাতে দেশ ছেড়ে যেতে না পারেন সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
চট্টগ্রামের সাংসদ শামসুল হক চৌধুরী জাতীয় সংসদের হুইপ, আর সাবেক যুবলীগ নেতা নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ভোলা ৩ আসনের সংসদ সদস্য।
তাদের সঙ্গে গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল হাই এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারেরও বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
গত মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরুর পর গ্রেপ্তার ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম, মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, মোহামেডান ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, তার সহযোগী এনামুল হক আরমান, কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি মোহাম্মদ শফিকুল আলম (ফিরোজ), অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধান এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমানের (মিজান) বিরুদ্ধে বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনু ও তার ভাই গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রুপন ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় যুবলীগের বহিষ্কৃত দপ্তর সম্পাদক কাজী কাজী আনিছুর রহমান ও তার স্ত্রী সুমি রহমান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ ও লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার স্ত্রী নাবিলা লোকমানের বিদেশযাত্রায়।
অন্যদিকে এনামুল হক এনুর সহযোগী ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম আজাদ, রাজধানীর কাকরাইলের জাকির এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. জাকির হোসেন ও সেগুনবাগিচার শফিক এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শফিকুল ইসলামের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনায় যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এরপর গত ৩০ সেপ্টেম্বর দুদক ক্যাসিনোর মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়।
সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন- উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. সালাউদ্দিন, সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী ও মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী।