স্বামীর সঙ্গে সিলেটের এমসি কলেজে বেড়াতে গিয়ে এক নববধূর ধর্ষণের শিকার হওয়ার মামলার প্রধান আসামি ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার ভোররাতে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে বলে শাহপরান থানার ওসি আব্দুল কাইয়ুম জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকেই পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করে যাচ্ছিল। রোববার ভোররাতে পুলিশের বিশেষ শাখার একটি দল ছাতক থেকে সাইফুরকে গ্রেপ্তার করে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ওসি আনোয়ার হোসেন মৃধা বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে সিলেট পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।”
গত শনিবার সকালে ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে নয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন- এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাছুম, অর্জুন লস্কর ও ‘বহিরাগত’ ছাত্রলীগ কর্মী রবিউল এবং তারেক আহমদ।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে টিলাগড় এলাকার এমসি কলেজে স্বামীর সাথে বেড়াতে আসা ওই তরুণীকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, “ওই নববধূ তার স্বামীর সঙ্গে এমসি কলেজে বেড়াতে আসেন। এক পর্যায়ে তার স্বামী সিগারেট খাওয়ার জন্য কলেজের গেইটের বাইরে বের হন।
“এ সময় ৬ থেকে ৭ জন যুবক ওই তরুণীকে জোর করে এমসি কলেজ ছাত্রাবাস এলাকায় তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে।”
এ সময় তার স্বামী প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করা হয় বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
খবর পেয়ে পুলিশ রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই তরুণীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তরুণী আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন হাসাপাতালে উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়।
“গাইনি বিভাগের এক অধ্যাপকের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে। তিনি শারীরিকভাবে অনেকটা সুস্থ রয়েছেন।”
এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে নারী ধর্ষণের ঘটনায় আরো দুই আসামি গ্রেপ্তার
রবিবার রাত পৌনে ১০টায় হবিগঞ্জের গোয়েন্দা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ নিজ আগনা গ্রাম থেকে রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রবিবার রাতে জেলার শায়েস্তাগঞ্জ এলাকা থেকে মামলার অন্যতম আসামি হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার বাগুনিপাড়া গ্রামের শাহ মাহবুবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৯। র্যাব-৯ সিলেট অফিস এই তথ্য নিশ্চিত করে।
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যাহ জানান, হবিগঞ্জের বানিয়াচং আজমিরীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ সেলিম ও ডিবির ওসি মানিকুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জ নিজআগনা গ্রাম থেকে রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল গ্রামের বাসিন্দা।
এর আগে মামলার আরেক আসামি অর্জুন লস্করকে হবিগঞ্জের মাধবপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার ভোরে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বহরা ইউনিয়নের (মনতলা) ভারতীয় সীমান্তবর্তী গ্রাম দুলর্ভপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সিলেট গোয়েন্দা পুলিশ। তবে তার বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার আটগ্রামে।