জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনে উপ-নির্বাচন না করতে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় পার্টি।
গত ১৮ জানুয়ারি সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নানের মৃত্যুতে বগুড়া-১ এবং ২১ জানুয়ারি ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুতে যশোর-৬ আসন ফাঁকা হয়। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেও ওই দুই আসনে আগামী ১৪ জুলাই উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণের তারিখ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু সেদিন জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী হওয়ায় তার ছোট ভাই বর্তমান চেয়ারম্যান জি এম কাদের নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে দিতে নির্বাচনকে কমিশনকে একটি চিঠি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এই চিঠি নির্বাচন কমিশনে পৌঁছে দেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা সরদার শাহজাহান, সাহিত্য সম্পাদক সুমন আশরাফ এবং যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে লেখা চিঠিতে জি এম কাদের বলেন, “জাতীয় পার্টি ১৪ জুলাই দলগতভাবে শোক দিবস হিসেবে পালন করবে। দেশবাসী এই দিনে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে। ১৪ জুলাই জাতীয় পার্টির অগণিত নেতাকর্মী-সমর্থক-শুভানুধ্যায়ীদের কাছে অত্যন্ত শোকাবহ অনুভূতির দিন।”
গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও তিন দশক ধরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্ব নিয়ে থাকা এরশাদের জীবনাবসান ঘটে গত বছর ১৪ জুলাই।
তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর দিনে উপ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা ‘অত্যন্ত দুঃখের বিষয়’ হিসেবে মন্তব্য করে জি এম কাদের বলেন, “এটা হয়ত অসতর্কতার কারণেও হতে পারে।”
বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনে উপ নির্বাচনের তারিখ পেছানোর অনুরোধ জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, “১৪ জুলাইয়ের আগে-পরে যে কোনো দিনে উপ-নির্বাচনের তারিখ পুনঃনির্ধারণ করে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এবং বিরোধী দলীয় নেতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করবেন।”
নির্দিষ্ট সময়ে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠানে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা মেনে চলা হলেও করোনাভাইরাস মহামারীতে সে গণ্ডি ‘পার হয়ে গেছে’ বলেও চিঠিতে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, “যে কোনো নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ এবং পরিবর্তনের এখতিয়ার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের আছে। অতীতেও প্রয়োজনে ঘোষিত নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে নির্বাচন কমিশন। তাছাড়া সপ্তাহের মাঝে নির্বাচন অনুষ্ঠানের নজিরও নেই।”
বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনে উপ-নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টি। বগুড়ায় লাঙ্গল প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন মোকছেদুল আলম ও যশোরে হাবিবুর রহমান হাবিব।
নির্বাচনে দলের অংশগ্রহণ নিয়ে জি এম কাদের বলেন, “জাতীয় পার্টি গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সব সময় ভূমিকা রেখে আসছে। আমরা প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও সবসময় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আসছি।”