পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের সঙ্গে তথ্যচিত্র নির্মাণে যুক্ত থাকা স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিপ্রা দেবনাথ কক্সবাজার কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার মো. মোকাম্মেল হোসেন জানান, আদালতের জামিন আদেশের কপি হাতে পাওয়ার পর রোববার বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর আগে বেলা সাড়ে ১২টায় শুনানি শেষে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম দেলোয়ার হোসেন রামু থানার মাদকের মামলায় তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। তাকে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন না দেওয়া পর্যন্ত জামিন দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া নিহত সিনহার অপর সহকর্মী শাহেদুল ইসলাম সিফাতের জামিন আবেদনের শুনানি হলেও আদালত এখনও আদেশ দেয়নি।
সিফাতের আইনজীবী মাহবুবুল আলম টিপু জানান, জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারাহর আদালতে বেলা পৌনে ১২টায় টেকনাফ থানার দুটি মামলায় সিফাতের জামিন আবেদনের শুনানি হয়।
“একই সঙ্গে মামলার তদন্ত ভার র্যাবের কাছে দেওয়ারও আবেদন জানানো হয়। আদালত সোমবার আদেশ দেবে।”
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ।
দুই বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়া রাশেদ ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণ বিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য গত প্রায় একমাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় ছিলেন। ওই কাজেই তার সঙ্গে ছিলেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত ও শিপ্রা।
কক্সবাজারের পুলিশ বলছে, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন’। পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে।
পুলিশ সেদিন ঘটনাস্থল থেকেই সিফাতকে গ্রেপ্তার করে। পরে নীলিমা রিসোর্ট থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শিপ্রাকে।
সিনাহ নিহতের ঘটনায় এবং গাড়ি থেকে মাদক উদ্ধারের অভিযোগে টেকনাফ থনায় দুটি মামলা করে পুলিশ, যাতে সিনহা এবং তার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আসামি করা হয়। আর নীলিমা রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে গ্রেপ্তার করার সময় মাদক পাওয়া যায় অভিযোগ করে তার বিরুদ্ধে রামু থানায় মামলা করা হয়।
তবে ঘটনার যে বিবরণ পুলিশ দিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
এ ঘটনায় সিনহার বোন নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলার আসামি টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলিসহ সাত পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।