কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন মারা গেছেন

image-380395-1609678682

বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন আর নেই। আজ রবিবার (৩ জানুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে রাজধানীর গুলশানে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।

রাবেয়া খাতুনের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গুণী এই ব্যক্তির প্রয়াণে শোকাহত সাংস্কৃতিক অঙ্গন।

সোমবার দুপুর ১২টায় সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে রাবেয়া খাতুনের মরদেহ রাখা হবে। এরপর দুপুর ২টায় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে তাঁকে।

সাহিত্যের সকল শাখায় ছিল রাবেয়া খাতুনের সফল বিচরণ। তাঁর প্রকাশিত শতাধিক গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে উপন্যাস, গবেষণাধর্মী রচনা, ছোটগল্প, ধর্মীয় কাহিনী, ভ্রমণকাহিনী, কিশোর উপন্যাস, স্মৃতিকথা ইত্যাদি।

রেডিও, টিভিতে প্রচারিত হয়েছে রাবেয়া খাতুনের লেখা অসংখ্য নাটক, জীবন্তিকা ও সিরিজ নাটক। তার গল্পে নির্মিত হয়েছে কয়েকটি চলচ্চিত্র। এ তালিকায় উল্লেখযোগ্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি চাষী নজরুল ইসলামের ‘মেঘের পরে মেঘ’। এছাড়া শাহজাহান চৌধুরী পরিচালিত ‘মধুমতি’ এবং মৌসুমীর ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ ছবি দুটি প্রশংসিত হয়েছে।

লেখালেখির পাশাপাশি শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতা করেছেন রাবেয়া খাতুন। তাঁর নিজস্ব সম্পাদনায় পঞ্চাশ দশকে বের হতো ‘অঙ্গনা’ নামের একটি মাসিক পত্রিকা।

১৯৯৩ সালে রাবেয়া খাতুন একুশে পদকে ভূষিত হন। ১৯৯৯ সালে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার পান তিনি। এছাড়া স্বাধীনতা পুরস্কার, বাংলা একাডেমি, বাচসাস (বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি) পুরস্কার, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ পুরস্কার ও অসংখ্য সম্মাননা উঠেছে তাঁর হাতে।

১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকার বিক্রমপুরে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন রাবেয়ো খাতুন। তাঁর পৈতৃক বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলায় অবস্থিত ষোলঘর গ্রামে। বাবা মৌলভী মোহাম্মদ মুল্লুক চাঁদ এবং মা হামিদা খাতুন। ১৯৪৮ সালে আরমানিটোলা বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা (বর্তমানে মাধ্যমিক) পাস করেন তিনি। রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের মেয়ে হওয়ায় বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোনোর পর তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়।

১৯৫২ সালের ২৩ জুলাই সম্পাদক ও চিত্র পরিচালক এটিএম ফজলুল হকের সাথে রাবেয়া খাতুনের বিয়ে হয়। তাঁর বড় ছেলে ফরিদুর রেজা সাগর বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যিক ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব এবং ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড ও চ্যানেল আই-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ছোট ছেলে ফরহাদুর রেজা প্রবাল একসময়ের টেলিভিশনের জনপ্রিয় উপস্থাপক ও স্থপতি এবং বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। বড় মেয়ে কেকা ফেরদৌসী বিশিষ্ট রন্ধনবিদ। বড় জামাতা মুকিত মজুমদার বাবু টেলিভিশন উপস্থাপক, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং চ্যানেল আই ও ইমপ্রেস গ্রুপের পরিচালক। ছোট জামাতা জহির উদ্দিন মাহমুদ মামুন বিশিষ্ট শিল্পপতি, চ্যানেল আই ও ইমপ্রেস গ্রুপের পরিচালক। বড় পুত্রবধূ কনা রেজা বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা ও পানসুপারির স্বত্ত্বাধিকারী। ছোট মেয়ে ফারহানা কাকলী সুগৃহিনী।

Pin It