যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস মহামারীকে দেশটির ওপর চালানো ‘সবচেয়ে খারাপ হামলা’ বলে বর্ণনা করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
চীনের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি এমন কথা বলেছেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।
তিনি বলেছেন, এই প্রাদুর্ভাব দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পার্ল হারবারে জাপানিদের বোমাবর্ষণ বা দুই দশক আগে ৯/১১ হামলা থেকেও মারাত্মকভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে আঘাত করেছে।
বুধবার হোয়াইট হাউসের ওভাল দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, “আমাদের দেশে এ পর্যন্ত যত হামলা হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে খারাপটির মধ্য দিয়ে গিয়েছি, আমাদের ওপর যত হামলা হয়েছে এটাই সবচেয়ে খারাপ।
“এটা পার্ল হারবারের থেকেও খারাপ, এটা ওয়াল্ড ট্রেড সেন্টারের থেকেও খারাপ। এর আগে এরকম হামলা হয়নি।
“এটা কখনোই ঘটতো না। উৎসেই থামানো যেত। চীনেই থামানো যেত। উৎসস্থলেই এটি থামানো উচিত ছিল। আর তা করা হয়নি।”
এই প্রাদুর্ভাবকে তিনি সত্যিকার যুদ্ধ হিসেবে দেখেন কি না, এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে ‘প্রাদুর্ভাবটি চীনের নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রে শত্রু’ বলে ইঙ্গিত করেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, “আমি এই অদৃশ্য শত্রুকে (করোনাভাইরাস) একটি যুদ্ধ হিসেবে দেখি। এটি এখানে যেভাবে এসেছে তা আমার পছন্দ নয়, কারণ এটিকে থামানো যেত, কিন্তু না, এই অদৃশ্য শত্রুকে একটি যুদ্ধ হিসেবে দেখি আমি।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরুর সময়ের ভূমিকার জন্য চীনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি যাচাই করে দেখছে।
এই নিয়ে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে যে ফাটল তৈরি হচ্ছে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর এক মন্তব্যে তা আরও গভীর হয়েছে বলে বিবিসি জানাচ্ছে। চীন প্রাদুর্ভাবের কথা ঢেকে রেখেছিল বলে অভিযোগ করেছেন পম্পেও।
করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকার বিষয়টি স্বীকার করেও ভাইরাসটি চীনের গবেষণাগারে সৃষ্টি করা হয়েছে এমন ‘প্রচুর প্রমাণ’ থাকার দাবি জানিয়েছেন পম্পেও।
বিবিসিকে তিনি বলেছেন, “আমাদের কাছে কোনো নিশ্চয়তা না থাকলেও উল্লেখযোগ্য প্রমাণ আছে যে এটি চীনের ল্যাব থেকে এসেছে।”
এর জবাবে পম্পেওকে মিথ্যা বলার দায়ে অভিযুক্ত করেছে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা। প্রাদুর্ভাব মোকাবেলার নিজেদের নেওয়া পদক্ষেপ থেকে দৃষ্টি ফেরাতেই যুক্তরাষ্ট্র এসব বলছে বলে মন্তব্য করেছে বেইজিং।
ডিসেম্বরে চীনের উহান থেকে নতুন এই করোনভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে যু্ক্তরাষ্ট্রের ১২ লাখ নাগরিক এতে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছে আর মারা গেছে ৭৩ হাজারেরও বেশি।