করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্বে নতুন করে ১০ কোটি মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে চলে আসতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস। বিশ্বের দরিদ্র্য দেশগুলোর জন্য আরে সহায়তা দেওয়ার জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে দরিদ্র্যদেশগুলো খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে বিশ্বব্যাংক এক প্রতিবেদনে বলেছিল, করোনার কারণে বিশ্বের ৬ কোটি মানুষ অতিদরিদ্র্য হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এবারের সাক্ষাতকারে ম্যালপাস বলেন, সারাবিশ্বের অতিমারি অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকলে বা করোনা চলমান থাকলে এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঋণদাতা দেশগুলো দরিদ্র্য দেশগুলোর ঋণ কর্মসূচি স্থগিত করেছে, যা ঝুঁকি তৈরি করছে। এটি ২০০৮ সালের আর্থিক সংকট এবং লাতিন আমেরিকার জন্য আশির দশকের ঋণ সংকটের চেয়েও খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে।
তিনি বলেন, গত বিশ বছরে বিশ্বে অতিদারিদ্রের সংখ্যা যেভাবে কমে এসেছে সেই অর্জন করোনাকালে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এই মানুষগুলো আবার অতিদারিদ্রের কাতারে চলে আসছে। বৈষম্য প্রকট হয়ে উঠেছে। অর্থনৈতিক মন্দা উন্নত বিশ্বের চেয়ে দারিদ্র্য দেশগুলোকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করছে। উন্নত দেশগুলো অর্থনীতি পুনরূদ্ধারে যে উদ্দীপনা দিচ্ছে সেটি তাদের দেশকে ঘিরেই। ফলে বৈষম্য বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।
তিনি বলেন, দেশগুলোর মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সমস্যা আরে তীব্রতর হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা নেই তবে সংকট দীর্ঘায়িত হলে এই আশঙ্কাও থেকে যায়। দরিদ্র্য দেশের শিশুদের স্কুল হতে ঝড়ে পরার হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এবারের মন্দা কিছু দেশের জন্য হতাশা ডেকে এনেছে। এরপরেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সবাই মিলে কাজ করলে এই অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে পাওয়া যাবে। তিনি জানান, বিশ্বব্যাংকের সদস্য দেশগুলোকে সহায়তার জন্য ঋণ ও অনুদান মিলিয়ে ১৬০ বিলিয়ন ডলারে তহবিল তারা বিতরণ করার লক্ষ্য নিয়েছে। সে লক্ষ্যে অর্থ সংগ্রহ করেছে বিশ্বব্যাংক। তবে উন্নয়নশীল দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্য-শিক্ষাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে তাদের অর্থায়নের আকার ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়ে যাবে।