করোনায় মৃত্যু এস আলম গ্রুপের পরিচালক মোরশেদুল আলম

FB-samakal-5ec88be1755a9

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া এস আলম গ্রুপের পরিচালক ( মার্কেটিং) মোরশেদুল আলমকে (৬৫) শুক্রবার রাত ১ টা ৩০ মিনিটে জানাযা শেষে পটিয়া পৌর সদরের ৪ নং ওয়ার্ডের নিজ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মৃত্যুর মাত্র ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে জানাযা শেষে বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় তাকে। এর আগে রাত ১০টা ৫০ মিনিটে আন্দরকিল্লাহ সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। পরে একটি অ্যাম্বুলেন্সযোগে তার মরদেহ চট্টগ্রাম শহর থেকে পটিয়ায় নিয়ে আসা হয়। এস আলম জামে মসজিদ কমপ্লেক্স চত্বরে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় এস আলম পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ দেড় শতাধিক সদস্য অংশ নেন বলে তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। মোজাহের আনোয়ার ও চেমন আরা বেগমের এই জ্যেষ্ঠ পুত্রের জানাজায় তার বাকি ছয় ভাইয়ের মধ্যে কেউই উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে মোরশেদুল আলমের দুই পুত্র মাহমুদুল আলম আকিব ও ফসিউল আলম, ভাগ্নে মোস্তান বিল্লাহ আদিল, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানের পিএস আকিজ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

পরিবারের মেজ সদস্য ও এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ বর্তমানে পরিবারসহ সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। অপর চার ভাই মোরশেদুল আলমের সঙ্গেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। গত ১৭ মে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ল্যাবের পরীক্ষায় সাইফুল আলম মাসুদের পরিবারের এই সদস্যরা করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন। তারা হলেন, এস আলম গ্রুপের পরিচালক রাশেদুল আলম, এস আলম গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ লাবু, ইউনিয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এস আলম গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল আলম এবং এস আলম গ্রুপের পরিচালক ওসমান গণি। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ওই পরিবারের ৩৬ বছর বয়সী এক নারীও।

করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর থেকে মোরশেদুল আলম তার অন্য চার ভাইয়ের সঙ্গে নগরীর সুগন্ধার বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলে মোরশেদুল আলমের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিইউ ওয়ার্ডে আগে থেকেই এস আলম পরিবারের আরেক সদস্য রাশেদুল আলম চিকিৎসাধীন ছিলেন। আইসিইউতে শয্যা না থাকায় তুলনামূলক ভাল অবস্থায় থাকা ছোট ভাই রাশেদুল আলমকে সরিয়ে মোরশেদুল আলমকে জায়গা করে দেওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

পরিবারের অন্য সদস্যরা বর্তমানে  চট্টগ্রাম নগরীর সুগন্ধা আবাসিক এলাকার এক নম্বর সড়কে নিজ বাসভবনেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। মৃত্যুর পর একটি অ্যাম্বুলেন্সযোগে মোরশেদুল আলমের মরদেহ চট্টগ্রাম শহর থেকে পটিয়ায় নিয়ে আসা হয়। এস আলম জামে মসজিদ কমপ্লেক্স চত্বরে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পটিয়া উপজেলা প্রশাসন ও পটিয়া থানা পুলিশের সার্বিক তত্বাবধানে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা জাহান উপমা, পটিয়া পৌরসভার মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানের পিএস আকিজ উদ্দিন চৌধুরী, পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন, স্থানীয় ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোফরান রানা।

ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোফরান রানা জানান, মরদেহের গোসল চট্টগ্রাম শহরে দেয়া হয়। মরদেহের ৫০ ফুট দূরত্বে জানাজায় অংশ নেন এলাকাবাসী। যাদের মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস ছিল তাদেরকে জানাজায় অংশ নিতে দেয়া হয়েছে। প্রশাসন ও পুলিশের তত্ত্বাবধানে লাশ দাফন ও জানাজায় সহযোগিতা করে পটিয়া পৌর গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ।

Pin It