যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে করোনা রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়ে পড়া বাংলাদেশি চিকিৎসক অর্পণা দেবনাথ লাবণী সুস্থ হয়েছেন। পরীক্ষায় কভিড-১৯ পজিটিভ আসার পরও তিনি হাসপাতালে ভর্তি হননি। বাসায় কোয়ারেন্টাইনে থেকেই চিকিৎসা নিয়েছেন। মেনে চলেছেন সুরক্ষার নিয়মাবলি। সপ্তাহখানেক আগে পুরোপুরি সুস্থ বোধ করার পর তিনি আবারও যোগ দিয়েছেন করোনা রোগীদের সেবায়।
নিউইয়র্ক শহরের জ্যামাইকা হাসপাতাল মেডিকেল সেন্টারে কাজ করেন ডা. অর্পণা দেবনাথ। পরিবারের সঙ্গে থাকেন কুইন্স এলাকার বাসায়। সেখানেই একটি ঘরে এতদিন কঠোরভাবে মেনে চলেছেন কোয়ারেন্টাইনের শর্তাবলি। একই বাসায় তার ছয় মাস বয়সী সন্তান থাকলেও শিশুটির সুরক্ষার স্বার্থেই তাকে দূরে রেখেছেন।
ডা. অর্পণা বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত হওয়া মানেই মৃত্যু নয়। বরং উল্টোটাই ঠিক যে, বেশিরভাগ মানুষ চিকিৎসায় সেরে উঠছেন। এখনও কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত না হওয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ভয় পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে মনে সাহস রেখে নিয়ম-কানুন মেনে চললে যে সহজেই সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব, তার উদাহরণ আমি নিজেই।’
জ্যামাইকা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে গত ২৭ মার্চ অসুস্থ বোধ করেন অর্পণা। করোনার সবগুলো লক্ষণ থাকায় তিনি পরদিন থেকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকেন। সুস্থ হওয়ার আগে ভুল করেও নিজের ঘরের বাইরে পা রাখেননি। আর একই বাসায় থাকা নিজের ছোট্ট সন্তানকে দেখতেন ভিডিওকলে।
অর্পণা জানান, নিউইয়র্কে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় সেখানকার হাসপাতালগুলোর অবস্থাও নাজুক। এ কারণে তিনি হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিয়েছেন। গত সপ্তাহে তিনি সুস্থ বোধ করেন। ২৩ এপ্রিল থেকে কাজে যোগ দেন।
এদিকে নিজে সেরে উঠতে না উঠতেই আবারও কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গে ডা. অর্পণা বলেন, ‘বিশ্ববাসীর এমন দুর্যোগের সময়ে শুধু নিজের কথা চিন্তা করে ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই। আর চিকিৎসক হিসেবে একবার সেবার ব্রত নেওয়ার পর তা থেকে পিছু হটার চিন্তা করাও পাপ।’