করোনা মহামারী আরও দুই বছর অব্যাহত থাকতে পারে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা। বললেন, বিশ্বের অধিকাংশ জনসংখ্যা নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত তা নিয়ন্ত্রণে আসবে না।- খবর এনডিটিভির
কোভিড-১৯ রোগের উৎসস্থল যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েক জন বিশেষজ্ঞ এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। তারা বলেন, এই মহামারীর ব্যাপ্তি আরও অন্তত ১৮ থেকে ২৪ মাস থাকবে। এ সময়ে টিকা কিংবা অন্য কোনো উপায়ে জনগোষ্ঠীর যথেষ্ট বড় অংশটি ধীরে ধীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারবে।
মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয় ও সংক্রামক রোগ গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীর প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন। যেটি মার্কিন গণমাধ্যম দ্য হিলে প্রকাশ করা হয়েছে।
সর্বশেষ ফ্লু মহামারীর কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, কোভিড-১৯ রোগের জন্য দায়ী অতি সংক্রমণশীল করোনাভাইরাসের বিস্তার আগামী দুই বছর অব্যাহত থাকবে। মানব সম্প্রদায়ের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি না-হওয়া পর্যন্ত ভাইরাসের বিস্তার বন্ধ হবে না।
প্রতিবেদনে জানায়, মানবদেহে ভাইরাসটি দীর্ঘ সময় সুপ্ত থাকায়, উপসর্গহীন বিস্তারের সংখ্যা বাড়ায় এবং ‘আর নট (Ro)’ উচ্চমাত্রায় থাকায় ফ্লু’র চেয়েও কোভিড-১৯ রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারছে।
এখানে ‘আর নট’ বলতে মৌলিক জনন সংখ্যা বোঝাচ্ছে। রোগটি সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে কোনও জনসমষ্টি বা সম্প্রদায়ের সব ব্যক্তি যখন সংক্রমিত হবার ঝুঁকিতে থাকে, তখন একজন সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে সরাসরি আরও কত জন ব্যক্তি আক্রান্ত হতে পারে, সেই সংখ্যার প্রত্যাশিত গড় মানকে বোঝায় আর নট কিংবা আর জিরো।
গবেষকদের পরামর্শ, যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি। যার মধ্যে কোনো টিকা সহজলভ্য না-হওয়া বা সামষ্টিক প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি না-হওয়ার ঘটনাও রয়েছে।
তারা বলেন, মহমারী যে শিগগিরই শেষ হচ্ছে না ও আগামী দুই বছরে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ভাইরাসটি পূর্ণশক্তি নিয়ে বিস্তার ঘটাতে পারে, সরকারের কাছ থেকে পাঠানো সংক্রমণ ঝুঁকি বার্তায় তা অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।
চীনের উহান থেকে শুরু হওয়া করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে দুই লাখ ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্ত হয়েছেন তিন কোটি ২০ লাখ মানুষ।
এমন এক সময় প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে, যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার লকডাউন ও সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনায় শিথিলতা আনতে যাচ্ছে। কাজেই এতে ভাইরাসটি আরও বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় অ্যালার্জি ও সংক্রামক ইনস্টিটিউটের পরিচালক অ্যান্থনি ফাউসি চলতি সপ্তাহে বলেন, করোনা অতিসংক্রমণশীল ও বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ায় আরেকটি তরঙ্গের মতো তার আরেকটি প্রবাহ ফিরে আসা অপরিহার্য।